ফেসবুকের মাধ্যমে হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার সোহেলের সাথে প্রেমের সম্পর্ক নুর নাহার (ছদ্মনাম)। এরপর তাকে কৌশলে ভারতীয় পাচারকারীর হাতে তুলে দেন সোহেল। ভারতে নিয়ে যাওয়ার পথেই তাকে একাধিকবার পাচারদলের সদস্যরা ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ করেছেন সেই নারী।
এ ঘটনায় পাটগ্রাম থানা পুলিশ শনিবার দিন ও রাতে অভিযান চালিয়ে পাচারদলের সদস্য আশরাফুল ইসলাম, মোকছেদুল হক, চম্পা বেগম নামে তিনজনকে গ্রেফতার করেছেন। রবিবার বিকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন পাটগ্রাম থানার ওসি ওমর ফারুক। তিনি বলেন, এ ঘটনার মূল হোতা সোহেল মিয়া হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার বেতাপুর গ্রামের কিবরিয়ার ছেলে। তাকে গ্রেফতার করার চেষ্টা চলছে।
পাটগ্রাম থানা সূত্রে জানা যায়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে ৩ বছর আগে টিকটক করতে গিয়ে পরিচয় ও পরে প্রেম হয় তাদের মধ্যে। তারপর প্রেমিক হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার বেতাপুর গ্রামের কিবরিয়ার পুত্র সোহেল - প্রেমিকা নুর নাহার (ছদ্মনাম) অবৈধ ভাবে সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ। সেখানে প্রেমিকা নুর নাহারকে দিয়ে জোর পূর্বক দেহ ব্যবসা করার চেষ্টা করেন। কিন্তু নুর নাহার বিষয়টি বুঝতে পেয়ে সোহেলের সাথে ঝগড়া করেন। পরে ৮/৯ মাস পর ভারতের কলকাতা থেকে কৌশলে একই পথে দেশে পালিয়ে আসে প্রেমিকা নুর নাহার (ছদ্মনাম)। কিছুদিন পরও দেশে আসেন সোহেল। অনেক বুঝিয়ে তাকে চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি হবিগঞ্জ আদালতে সোহেল-প্রেমিকা নুর নাহার (ছদ্মনাম) বিয়ে করেন। কিছুদিন পর নুর নাহার গর্ভবতী হন।
তারপর আবারও প্রতারণার আশ্রয় গ্রহণ করেন প্রেমিক থেকে স্বামী হওয়া সোহেল। নুর নাহারকে পাচারের জন্য আবারও পাচারকারীদের সাথে যোগাযোগ করে লালমনিরহাটের পাটগ্রামে পাঠিয়ে দেয় স্বামী সোহেল। গত ১৩ মে ভোরে পাচারকারীরা তাকে ওই উপজেলার দহগ্রাম সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচার করে দেয়। এ সময় নুর নাহারকে ধর্ষণ করেন ওই পাচার দলের সদস্য মোকছেদুল। নুর নাহার ভারতে প্রবেশের পর বুঝতে পারেন তার স্বামী তাকে পাচারকারীদের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন। ১৫ মে রাতে আবারও নুর নাহার কৌশলে দেশে দহগ্রাম সীমান্ত দিয়ে ফিরে আসেন। দেশে ফেরার পর এবার আশরাফুল ইসলাম নামে অপর এক পাচারকারী দলের সদস্য তাকে ধর্ষণ করেন। টাকার জন্য নুর নাহার ১৫ মে থেকে আটকিয়ে রাখেন পাচার দলের সদস্যরা। সেখান থেকে কৌশলে পালিয়ে পাটগ্রাম থানায় আশ্রয় গ্রহণ করে নুর নাহার।
পাটগ্রাম থানার ওসি ওমর ফারুক এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ইতোমধ্যে ৩ জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। ঘটনার মূল হোতা প্রেমিক থেকে স্বামী হওয়া সোহেলকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।