মানুষের জীবনে কত স্বপ্নই না থাকে। কতো ভাবনাই না ভেবে থাকে। ছোট এই জীবনে কত ইচ্ছেই না করে থাকে। মনের আকাশে কত কল্পনাই না ভেসে থাকে। তবে ছোট বেলায় সেই স্বপ্নটা একটা বিন্দুতেই আটকে থাকে; ‘বড় হয়ে কি হবে সে?’ কেউ বলে থাকে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার কেউ পাইলট আবার কেউ বা মস্ত অফিসার।
কিন্তু শিক্ষিকা যখন প্রশ্ন করলো তাকে, কী হতে চাও জীবনে? কিছু না ভেবেই তার জবাব ক্রিকেটার হতে চাই, ক্রিকেট খেলতে চাই। বলতেই পারেন, এই আর তেমন কী! এখন তো ক্রিকেটার হতে চায় প্রায় সবাই, অহরহ হরহামেশাই। হ্যাঁ, ঠিক আছে, কিন্তু তার গল্পটা তো এই সময়কার নয়; সেই সময় থেকে আজ প্রায় দেড় যুগ পাড় হয়। সেই সময়ে এমন সাহস ভাবা যায়!
সাহসী উত্তর শুনে হতভম্ব শিক্ষিকা ‘শূন্য’ বসালেন পরীক্ষার খাতায়। তাতে কি তাকে দমানো যায়? সেরারা কি কখনো ব্যর্থতাকে ভয় পায়? তারা তো নতুন উদ্যমে এগিয়ে চলে স্বপ্ন পূরণের দোরগোড়ায়। জেলা দল, বিভাগীয় দল হয়ে জায়গা পেলেন অনুর্ধ্ব ১৯-এ- মিরাজ, শান্ত, সাইফুদ্দীনদের ব্যাচে৷
কিন্তু কথায় আছে না, ‘সফলতার পথ সহজ নয়; বাঁধা পাড়ি দিয়েই এসেছে বিজয়।’ সেই বাঁধা আবারো আসলো জীবনে, নানাজনের নানান কথা শেল হয়ে বাঁধলো বুকে। ভাগ্যও দিচ্ছিল না সায়। সতীর্থরা যখন জাতীয় দলে; সে তখন খ্যাপ খেলে বেড়ায়। একসময় খেলা ছেড়ে দেবেন বলেই ভেবেছিলেন বিষন্নতা ও হতাশায়।
বাকিটা শুনি ভাষায়—
‘আমি যা ক্রিকেট খেলতাম, তাতেই নিজের খরচ চালানোর চেষ্টা করতাম। আমার কিছুই যেন কাজে আসছিল না। ক্রিকেট খেলব কি না, এ নিয়েও দ্বিধায় পড়ে গিয়েছিলাম। বিষন্নতায় ভুগছিলাম।
আমাদের ক্রিকেট সংস্কৃতিই এমন, এখানে টিকতে হলে মানসিকভাবে অনেক শক্ত হতে হয়। মাঝে মাঝে মনে হতো খেলা ছেড়ে দেয়ার কথা। আশপাশের মানুষজন কেবল জাতীয় দলে কেন খেলতে পারছি না, সেটি নিয়ে প্রশ্ন তুলতো। কেউ কেউ বলতো, তোমার সঙ্গে খেলা ক্রিকেটাররা যদি জাতীয় দলে খেলতে পারে, তুমি কেন পারবে না। এসব কথা আশপাশে চলতেই থাকে। আর স্বাভাবিকভাবেই এই কথাগুলো কষ্ট দিত।
সূত্রঃ মানবচজমিন