আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মহানুভবতা অনুধাবনে বিএনপির ব্যর্থতার কারণে জনগণ মনে করে খালেদা জিয়াকে আবারো কারাগারে পাঠানো উচিত।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) ২৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানমালা উদ্বোধনে প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
ডিআরইউ সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম হাসিবের সঞ্চালনায় জাতীয় প্রেস ক্লাব সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিনসহ সাংবাদিক নেতারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
ড. হাছান বলেন, ‘আমি কিছুক্ষণ আগে ফেসবুকে দেখলাম, খালেদা জিয়া, মির্জা ফখরুল সাহেবরা সাঁতরে পদ্মা নদী পার হচ্ছেন। এর অর্থ হচ্ছে, অনেক মানুষ মনে করে তারা যেহেতু পদ্মা সেতুর বিরোধিতা করেছিল, সেতুর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছিল, আওয়ামী লীগ সরকার সেটি করতে পারবে না বলে আস্ফালন করেছিল, সেজন্য তাদের সাঁতরে পদ্মা পার হওয়া উচিত, সেতুর ওপর দিয়ে নয়।’
‘বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা সব মানুষের জন্য এই পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছেন, তবে যারা এর বিরোধিতা করেছিল তাদের ক্ষমা চাওয়া উচিত’ বলে মনে করেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আজকে বিএনপি বিক্ষোভ প্রদর্শন করছে অথচ খালেদা জিয়া তো প্রধানমন্ত্রীকে হত্যা করার অপচেষ্টা চালিয়েছেন ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা সেটির প্রমাণ। সেই খালেদা জিয়া দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হওয়া সত্ত্বেও দু’বছর তাকে কারাগারের বাইরে রেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে মহানুভবতা দেখিয়েছেন, সেটি নিয়েই এখন অনেকে প্রশ্ন করছেন- এই মহানুভবতার মূল্য যারা দিতে জানে না, তাদের প্রতি এই মহানুভবতা কেন দেখাচ্ছেন, খালেদা জিয়াকে আবার কারাগারে পাঠানো উচিত।’
এর আগে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি প্রাঙ্গণে তথ্যমন্ত্রী জাতীয় পতাকা এবং ডিআরইউ সভাপতি সংগঠনের পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠান সূচনা করেন।
হাছান মাহমুদ তার বক্তব্যে বলেন, ‘২৭ বছরের পথ পরিক্রমায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি ঐক্যবদ্ধ থেকেছে, রাজনীতি থেকে দূরে থেকেছে, রাজনৈতিকভাবে বিভক্ত হয়নি, যা অত্যন্ত বড় সাফল্য বলে আমি মনে করি। আশা করি, আগামী ৫০ বছর পরেও ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি ঐক্যবদ্ধ থাকবে।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ গণমাধ্যম সঠিকভাবে কাজ করলে রাষ্ট্র বিকশিত হয়, সমাজ বিকশিত হয়, উপকৃত হয়। সেই কথাটি মাথায় রেখেই প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা গণমাধ্যমের উন্নয়নের জন্য অনেক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। গত সাড়ে ১৩ বছরে বাংলাদেশে গণমাধ্যমের ব্যাপক বিকাশ ঘটেছে। আজ থেকে ১৩ বছর আগে ১০টি টেলিভিশন চ্যানেল ছিল, এখন প্রায় ৩৮টি প্রাইভেট টেলিভিশন চ্যানেল সম্প্রচারে আছে। আরও কয়েকটি সম্প্রচারে আসছে। বেসরকারি রেডিও ছিল না, এখন ১২টির বেশি এফএম রেডিও, ১৮টির মতো কমিউনিটি রেডিও সম্প্রচারে আছে। পত্রিকার সংখ্যা সাড়ে ৪শ থেকে সাড়ে ১২শতে উন্নীত হয়েছে। অনলাইন গণমাধ্যম কত হাজার সেটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার বিষয়, তবে আমাদের কাছে ৫ হাজারের বেশি আবেদন পড়েছে রেজিস্ট্রেশনের জন্য। আমরা গণমাধ্যমের বিকাশের স্বার্থে কাজ করছি। বাংলাদেশে গণমাধ্যম যেভাবে স্বাধীনভাবে কাজ করে, বাংলাদেশের গণমাধ্যমের যেভাবে বিকাশ হয়েছে, সেটি অনেক উন্নয়নশীল দেশের জন্য উদাহরণ।’
সাংবাদিকদের উদ্দেশে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমি সবসময় আপনাদের পাশে আছি, যখন মন্ত্রী ছিলাম না তখনো পাশে ছিলাম, এখন মন্ত্রী হিসেবে পাশে আছি, সবসময় তো কেউ মন্ত্রী থাকে না, তখনো আমি আপনাদের পাশে থাকব।’
ডিআরইউ সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠু তার শুভেচ্ছা বক্তব্যে বলেন, ‘যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন দেশের গণতন্ত্রের অভিযাত্রায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি অগ্রণী ভূমিকা রেখে এগিয়ে যাবে।’
সূত্র: যুগান্তর