বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং কোচ জেমি সিডন্স বলেছেন, ‘তামিমকে চারে নামাতে হলে আরেকজন ভালো ওপেনার লাগবে। আমার মনে হয়, চার নম্বরে সে (তামিম) দারুণ হবে।’ তামিম নিজে অবশ্য দূরতম ভবিষ্যতেও তেমন সম্ভাবনা দেখছেন না, ‘মিডল অর্ডারে ব্যাট করা নিয়ে কখনো ভাবিনি, এখনো ভাবছি না। আমার সেরকম কোনো ইচ্ছাও নেই।
গতকাল বিকেলে একটি বিজ্ঞাপনের শুটিংয়ে ব্যস্ত তামিম ইকবাল ফোনে প্রশ্ন শুনে বিস্মিত, ‘আমি মিডল অর্ডারে? কেন? কে বলল?’
বলেছেন জেমি সিডন্স, নিজের ব্যাটসম্যানশিপে যে নিউজিল্যান্ডারের বিশাল প্রভাব আছে বলে বিশ্বাস করেন তামিম। বাংলাদেশের প্রধান কোচ হয়ে জেমি যখন এসেছিলেন, তখন তারকাখ্যাতি পেতে শুরু করেছেন সাকিব আল হাসান ও তামিম। তাঁদের তারকা হয়ে ওঠার পেছনে জেমির অকাতর সমর্থন ছিল। এই দুই মেগাস্টারের সঙ্গে সম্পর্কটা তাঁর এখনো অটুট।
তো, এমন একজনের যখন তামিমকে চার নম্বরে ব্যাটিং করতে দেখার আগ্রহ প্রকাশ পায় তখন সম্ভাবনা ডালপালা মেলে।
গতকাল মিরপুরে সংবাদমাধ্যমের কাছে বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং কোচ জেমি সিডন্স বলেছেন, ‘তামিমকে চারে নামাতে হলে আরেকজন ভালো ওপেনার লাগবে। আমার মনে হয়, চার নম্বরে সে (তামিম) দারুণ হবে। ’
তামিম নিজে অবশ্য দূরতম ভবিষ্যতেও তেমন সম্ভাবনা দেখছেন না, ‘মিডল অর্ডারে ব্যাট করা নিয়ে কখনো ভাবিনি, এখনো ভাবছি না। আমার সেরকম কোনো ইচ্ছাও নেই। ’ তিন ফরম্যাটের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মোট ৪২৯ বার ব্যাট হাতে নেমেছেন। এর মধ্যে ৪৩৮ বারই ইনিংসের সূচনা করেছেন তামিম। একবার, ২০১৭ সালে পচেফস্ট্রুমে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচের প্রথম ইনিংসে মিডল অর্ডারে নেমেছিলেন এই বাঁহাতি ওপেনার। তবে সেটি স্বাগতিক দলের প্রথম ইনিংসে চোট পাওয়ার কারণে। ‘জীবনে একবারই মিডল অর্ডারে খেলেছিলাম। সেবার পাঁচ নম্বরে নামতে হয়েছিল চোটের কারণে। ৩৯ রান করেছিলাম সম্ভবত’, একবার বলেই রানটাও ঠিকঠাক মনে আছে তামিমের।
তাহলে হুট করে মিডল অর্ডারে তাঁকে দারুণ মানিয়ে যাবে, বললেন কেন জেমি সিডন্স? দুজনের যে সম্পর্ক, তাতে বাটিং কোচের উচ্ছ্বাসে মনে হয়েছে নিশ্চিত তামিম বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন। সেরকম কিছু ঘটেনি বলেই জানিয়েছেন তামিম, ‘এটা নিয়ে কারো সঙ্গে আলোচনা হয়নি। ’ ব্যাটিং অর্ডারে পরিবর্তন নিয়ে যদি কিছু বলেও থাকেন, সেটি ড্রেসিংরুমের আড্ডায় হয়ে থাকতে পারে। ‘ড্রেসিংরুমে আমরা অনেক রকম মজা করি। লম্বা সময় ফিল্ডিংয়ের পর ওপেনারদের নামতে হয়। তখন হয়তো মজা করে কাউকে বলে থাকতে পারি যে, ইস, যদি পরে ব্যাট করতাম, তাহলে রেস্ট পাওয়া যেত। এটা স্রেফ মজা করে বলা, সিরিয়াস কিছু না। ’
‘সিরিয়াস’ সমস্যা বাংলাদেশ দলের টেস্ট ব্যাটিংয়ের অন্যখানে। নতুন বলেই যে সর্বনাশ হয়ে যাচ্ছে ব্যাটিংয়ের! ওয়েস্ট ইন্ডিজে আরো হুমকি হয়ে দেখা দিতে পারে লাল বল। ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে সর্বশেষ সফরে সেই বিপর্যয়ের সাক্ষী টেস্ট অধিনায়কত্ব ফিরে পাওয়া সাকিবও। জেমি সিডন্সও লাল কালিতে চিহ্নিত করেছেন লাল বলের সমস্যা, ‘নতুন বল প্রধান হুমকি। নতুন বলে আমাদের আরো ভালো ব্যাটিং করতে হবে। মমিনুল ফর্মে ফিরলে দারুণ হয়। আমার ওপর বিশ্বাস রাখতে পারেন (নাজমুল হোসেন) শান্ত খুব ভালো ব্যাটার। চট্টগ্রাম টেস্টে আমাদের ওপেনিং যেমনটা হয়েছিল, সেরকম কিছু করতে হবে। তামিম ও মুশফিক ভালো ফর্মে আছে। তবে ২০ রানে চার-পাঁচ উইকেট চলে যাওয়ার ব্যাপারটা থামাতে হবে। এই সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করতে হবে। ’ জেমির দৃষ্টিতে এই সমস্যার মূল কারণ, ‘স্রেফ চাপের কারণে। ’
এই চাপমুক্তির টনিক হতে পারেন তৃতীয় মেয়াদে টেস্ট অধিনায়ক হওয়া সাকিব। জেমির আশাবাদে তেমনই ইঙ্গিত, ‘সাকিব একের ভেতরে দুই। খুব ভালো অধিনায়ক, খেলাটাও ভালো বোঝে। একই সঙ্গে যে কিনা নিয়মিত পারফরম করে। অধিনায়ক হিসেবে সাকিব দারুণ করবে। ’ নেতৃত্ব ভালো হলে দলের নৈপুণ্যে এর প্রতিফলন থাকবে। সঙ্গে একটা দাবিও জানিয়ে রেখেছেন জেমি, ‘অধিনায়ককে খেলতেই হবে। না খেললে অধিনায়কত্ব করা কঠিন। আমার মনে হয় আবার নেতৃত্ব পাওয়ায় সাকিব রোমাঞ্চিত। আগে যে জিনিসটি দেখা যাচ্ছিল না এবার ওর নেতৃত্বে সেটা দেখা যাবে বলে আমার ধারণা।