চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ আগুন নেভাতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের সাতজন কর্মী নিহত হয়েছে। আহত হয়েছেন ফায়ারের আরও ২১ কর্মী। এর মধ্যে ১৫ জন চট্টগ্রাম সিএমএইচে চিকিৎসাধীন, তাদের মধ্যে দুই জনের অবস্থা গুরুতর। বাকি ছয়জনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর রিলিজ দেওয়া হয়েছে।
নিহতদের মধ্যে তিনজনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন মনিরুজ্জামান, সালাউদ্দিন ও আলাউদ্দিন। তাদের মরদেহ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
আজ রোববার দুপুরে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশরাফুল করিম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গতকাল শনিবার রাতে আগুন লাগার পর রাত পৌনে ১১টার দিকে সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দুর্ঘটনায় ৪৩ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আহত হয়েছেন দুই শতাধিক। তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও আশপাশের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া এখনো নিখোঁজ রয়েছেন অনেকে।
বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের কারণ এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণের জন্য ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর। পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে।
এ ঘটনায় নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে ৫০ হাজার করে টাকা ও আহত প্রত্যেক ব্যক্তিকে ২০ হাজার করে টাকা দেবে জেলা প্রশাসন। শ্রম মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন তহবিল থেকে সরকার দেবে নিহত প্রত্যেক শ্রমিকের পরিবারকে ২ লাখ টাকা এবং আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে সহায়তা। আহতদের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনে অতিরিক্ত অর্থ দেওয়া হবে।
সীতাকুণ্ডে ২৪ একর জায়গাজুড়ে বিএম কনটেইনার। প্রতিষ্ঠানটি মূলত পণ্য রপ্তানিতে কাজ করে। এখান থেকে পণ্য রপ্তানির জন্য কনটেইনারগুলো প্রস্তুত করে চট্টগ্রাম বন্দরে পাঠানো হয়। ৩৮ ধরনের পণ্য রপ্তানিতে কাজ করে প্রতিষ্ঠানটি। ঘটনার সময় সেখানে ৫০ হাজার কনটেইনার ছিল বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। অগ্নিকাণ্ডের সময় অন্তত ২০০ শ্রমিক সেখানে কাজ করছিলেন বলেও জানা গেছে। তবে সেখানে ঠিক কত সংখ্যক মানুষ তখন ছিলেন তা এখনো সঠিকভাবে জানা যায়নি।