চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনারে ভয়াবহ আগুনে ফায়ার সার্ভিসের ৯ কর্মীসহ নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪৯ জন হয়েছে। এরমধ্যে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মাত্র ১৭ জনের লাশ শনাক্ত করা হয়েছে। বিস্ফোরণে ২৫০ ব্যক্তি আহত হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
রবিবার (৫ জুন) এ তথ্য নিশ্চিত করেন সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহাদাত হোসেন। অন্যদিকে, বিকালে ফায়ার সার্ভিসের গণমাধ্যম শাখা থেকে পাঠানো এক বার্তায় একই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
পিবিআই পুলিশ পরিদর্শক মো. মনির হোসেন বলেন, প্রযুক্তির সহায়তায় লাশগুলোর পরিচয় শনাক্ত করার চেষ্টা করছি। আঙুলের ছাপের মাধ্যমে পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে। ইতোমধ্যে ১৭ জনের পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। যাদের আঙুলের ছাপ নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না তাদের ডিএনএ পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে শনাক্ত করা হবে।
নিহতদের মধ্যে শনাক্ত হওয়া ১৭ জনের মধ্যে ১৫ জনের নাম পাওয়া গেছে। মোমিনুল হক, মহিউদ্দিন, হাবিবুর রহমান, রবিউল আলম, তোফায়েল ইসলাম, ফারুক জমাদ্দার, আফজাল হোসেন, মো. সুমন, মো. ইব্রাহিম, হারুন উর রশিদ, মো. নয়ন, শাহাদাত হোসেন, শাকিল তরফদার, শাহাদাত উল্লাহ জমাদার ও ফায়ার সার্ভিস কর্মী মনিরুজ্জামান।
এরআগে, শনিবার (৪ জুন) দিবাগত রাত সাড়ে ১০টায় বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে পুরো ডিপো এলাকা। পরে ভয়াবহ আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ডিপোতে আমদানি-রফতানির বিভিন্ন মালামালবাহী কনটেইনার ছিল। ডিপোর কনটেইনারে রাসায়নিক ছিল, বিকট শব্দে সেগুলোতেও বিস্ফোরণ ঘটে। দ্রুত চারদিকে আগুন ছড়িয়ে পড়ায় হতাহত হয়েছে বেশি। আহতদের উদ্ধার করে চমেক হাসপাতাল ও বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়। খবর পেয়ে আগুন নেভাতে যাওয়া ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিটের সদস্যরা পরবর্তীতে অন্য কনটেইনারের বিস্ফোরণে গুরুতর আহত হন। এদের মধ্যে এখন পর্যন্ত আট জনের মৃত্যু হয়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ডিপোর আগুন এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আগুন নিয়ন্ত্রণে সেনা সদস্যরা যোগ দিয়েছেন। ফায়ার সার্ভিসের ২৯টির বেশি ইউনিট কাজ করছে।
সরেজমিন ও বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, এ পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের ৯ কর্মী নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া সংস্থাটির ৩০ কর্মী, ১০ পুলিশ সদস্যসহ ২৫০ লোক আহত হয়েছেন। এদিকে দুই ফায়ার কর্মী নিখোঁজ রয়েছেন। অনেক লোক তাদের স্বজনদের খুঁজে বিভিন্ন হাসপাতালসহ দুর্ঘটনাস্থলে ছুটে বেড়াচ্ছেন।