তৃতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন করেছে পরীক্ষার্থীরা।
সেমবার (৬ জুন) সকাল ১১ টায় ভোলা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় পরীক্ষা বাতিল করে পুনরায় পরীক্ষা নেযার দাবি জানান তারা।
এ সময় বক্তারা বলেন, দীর্ঘ প্রতীক্ষার আমাদের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠিত এই পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে নানাবিধ অনিয়ম ও দুর্নীতি সংঘটিত হয়েছে। পরীক্ষার সময় কেন্দ্রে সকল প্রকার ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস নিয়ে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও অনেকেই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে হলরুমে ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস নিয়ে প্রবেশ করেছেন। ঘড়ি নিয়ে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও হলরুমগুলোতে সময় দেখার জন্য কোন ঘড়ির ব্যবস্থা ছিলনা। ওএমআর শিট পূরনের জন্য আলাদা সময় বরাদ্দ দেওয়ার কথা থাকলেও সেই সময়টুকু হল পরিদর্শকরা দেননি। কিছু কিছু কেন্দ্রে নির্ধারিত সেট কোডের বিপরীতে ভুল প্রশ্নপত্র বিতরণ করা হয়েছে এবং কিছু সময় অতিবাহিত হওয়ার পর ভুলটা পরিবর্তন করে সঠিক প্রশ্নপত্র প্রদান করা হয়।
তারা আরো বলেন, হল পরিদর্শকদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষনের ঘাটতি থাকায় এরকমটা হয়েছে। এতে করে পরীক্ষার্থীদের অনেক সময় নষ্ট হয়ে যায়। সবচেয়ে বড় অনিয়ম ছিল হলরুমে পরীক্ষা চলাকালীন মোবাইল ফোন ব্যবহার করে পরীক্ষা দেওয়া। হল পরিদর্শকের সামনে মোবাইল ফোন ব্যবহার করা স্বত্বেও তারা ছিলেন নিরব দর্শক। বাহির থেকে মোবাইলে ক্ষুদেবার্তা এবং চিরকুট পাঠানো হয়েছে। অধিকাংশ কেন্দ্রে এ ধরণের ঘটনা ঘটেছে। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। অনিয়মের কারণে ৩ জনকে কারাদণ্ড এবং ৫ জনকে বহিষ্কার করা হলেও বাকীরা ধরাছোঁয়ার বাহিরে।
আমরা বিশ্বাস করি, শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড। আর এই মেরুদণ্ড তৈরীতে প্রাথমিক শিক্ষকদের ভূমিকা অত্যাধিক। অবৈধ পদ্ধতি অবলম্বন করে যারা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবেন এবং নিয়োগ পাবেন তাদের দ্বারা আমাদের নতুন প্রজন্ম কতটুকু সুশিক্ষা অর্জন করতে পারবে তা অজানা। দুর্নীতিবাজদের কারণে মেধাবীরা বঞ্চিত হবেন নিয়োগ থেকে।
ভোলায় অনুষ্ঠিত হওয়া প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা-২০২০ নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা সাপেক্ষে অপরাধীদের খুঁজে বের করে তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা এবং পূর্বের পরীক্ষা বাতিল করে নতুনভাবে পরীক্ষা নেয়ার দাবি জানান বক্তারা।
মানববন্ধন শেষে পরীক্ষা বাতিল চেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, তৃতীয় ধাপে গত শুক্রবার (০৩ জুন) ভোলা জেলায় ২৫ টি কেন্দ্রে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত নিয়োগ পরীক্ষায় ভোলা জেলায় ২৪৪ টি শূন্যপদের বিপরীতে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন ১৫, ৬৩৭ জন।