শুধু মহাত্মা গান্ধী নন, এবার থেকে ভারতীয় নোটে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও এপিজে আব্দুল কালামের ছবিও থাকতে পারে। দেশটির কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক ও রিজার্ভ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে ভাবনা চিন্তা শুরু করেছে।
বর্তমানে ভারতে যে রুপিগুলোর প্রচলন রয়েছে, তার সবকটিতেই শুধুমাত্র জাতির জনক মহাত্মা গান্ধীর ছবিই রয়েছে। দেশটির কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকের খবর- মহাত্মা গান্ধীর ছবির পাশাপাশি ভারতীয় রুপিতে অন্যন্য বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব ও মনীষীদের ছবিও ব্যবহার করতে চলেছে রিজার্ভ ব্যাংক।
১৯৬৯ সাল থেকে রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া রুপির ওপর গান্ধীর ছবি ছেপে আসছে। সে সময় শুধুমাত্র ১০০ রুপির নোটের ওপর গান্ধীর ছবি ছাপা হত। সে ছবিটি সেবাগ্রাম আশ্রমে থাকাকালীন সময়ে তোলা হয়েছিল। এরপর ১৯৮৭ সালে গান্ধীর ছবিটা আবার বদলায়। বর্তমানে যেটা রাষ্ট্রপতি ভবন, ব্রিটিশ আমলে সেটাই ছিল ভাইসরয়ের বাড়ি। সেখানে ১৯৪৬ সালে গান্ধীজির আরেকটি ছবি তোলা হয়, ১৯৮৭ সালের অক্টোবরে একটি ৫০০ রুপির নোটে প্রথম ওই ছবি ছাপানো হয়। পরবর্তী সময় থেকে সেই ছবিই ৫, ১০, ২০, ১০০, ২০০, ৫০০ আর ২,০০০ রুপির নোটে প্রচলন রয়েছে। এরপর ১৯৯৬ সাল থেকে টানা ছাপা হয়েছিল মহাত্মা গান্ধীর ছবিসহ সিরিজের নোট।
কিন্তু এবার আমুল বদল আসতে চলেছে। এবার ভারতীয় রুপিতে দেখা যেতে পারে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছবি। পাশাপাশি দেখা যাবে বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী তথা ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল কালামের ছবি।
জানা যায়, ইতিমধ্যেই রিজার্ভ ব্যাংক আর দেশটির অর্থমন্ত্রক এ নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা সেরে ফেলেছে। শুধু তাই নয়, দিল্লির আইআইটির অধ্যাপক দিলীপ টি শাহানির কাছে ইতিমধ্যেই গান্ধী, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং আব্দুল কালামের ছবি সম্বলিত দুটি আলাদা ধরনের নোটের নমুনা পাঠিয়েছে রিজার্ভ ব্যাংক। এখন নিরাপত্তার বিষয়টা অর্থাৎ নকল যাতে না হয় সে বিষয়াই চূড়ান্ত করা হচ্ছে।
বিভিন্ন নোটে এক এক ধরনের ব্যক্তিত্বদের ছবি থাকবে। কেন এমন পরিকল্পনা? ধারনা করা হচ্ছে- ইউএস ডলারের মতোই ভারতীয় নোটেও একাধিক বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব বা মনীষীর ছবি ব্যবহার করতে চাইছে ভারতের রিজার্ভ ব্যাংক। সে কারণেই এ পরিকল্পনা। যেমনটা আমেরিকায় বিভিন্ন ডলারে ওয়াশিংটন, বেঞ্জামিন ফ্র্যাঙ্কলিন, টমাস জেফারসন, অ্যান্ড্রু জ্যাকসনের মতো একাধিক ব্যক্তিকে পাওয়া যায়।
অবশ্য ২০২০ সালে রিজাভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া এ প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছিল। তখন সেভাবে কেন্দ্রীয় সরকার বিষয়টি না ভাবলেও এবার এক প্রকার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে ফেলেছেন বলে দেশটির অর্থমন্ত্রক সূত্রে জানা যাচ্ছে।