নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে গণধর্ষণের পর এক নারী ও তার স্বামীকে হত্যার করে লাশ গুমের মামলায় ছয় আসামির মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সোমবার (৬ জুন) দুপুরে জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক নাজমুল হক শ্যামল এ রায় দেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা ছয়জনই ভাড়াটে খুনি এবং রায় দেওয়ার সময় তাদের মধ্যে তিনজন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
রায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামান জানান, রূপগঞ্জ উপজেলার গঙ্গানগর গ্রামে আব্দুর রহমান ও তার স্ত্রী খাদিজা বেগমের মধ্যে পারিবারিক বিরোধ দেখা দেয়।
পরে তাদের সম্পর্কের অবনতি হলে আব্দুর রহমান তার স্ত্রী খাদিজাকে হত্যা করতে একই এলাকার আরিফুল ইসলাম, জামাল হোসেন, সুমন, সুমন-২, লোকমান ও শফিক নামের ছয়জনকে দশ হাজার টাকার চুক্তিতে ভাড়া করেন।
পরে পরিকল্পনা অনুযায়ী ভাড়াটে খুনিরা আবদুর রহমানের সহায়তায় ২০০৯ সালের ১১ আগস্ট খাদিজাকে রাজধানীর একটি নির্জন স্থানে ডেকে নিয়ে গণধর্ষণের পর হত্যা করে। তবে চুক্তি অনুযায়ী আবদুর রহমান ভাড়াটে খুনিদের পাওনা দশ হাজার টাকা না দেয়ায় তাকেও সেখানে খুন করা হয়। পরে ভাড়াটে খুনিরা স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ একটি ডোবায় ফেলে গুম করে পালিয়ে যায়।
পরদিন দুইজনের মরদেহ উদ্ধার হলে এ ঘটনায় নিহত খাদিজার বাবা আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছয়জনকে গ্রেফতারের পর তদন্ত শেষে সবাইকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।
তাদের মধ্যে তিন আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। পরে অপর তিন আসামি জামিনে ছাড়া পেয়ে পালিয়ে যায়। এদিকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর রকিব উদ্দিন জানান, আদালত ন্যায়বিচার করেছেন এবং বাদীপক্ষ এ রায়ে সন্তুষ্ট আছেন।
তিনি আরও জানান, আদালত এ মামলায় ১২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করে দীর্ঘ তেরো বছর পর রায় দিয়েছেন।