লিওনেল মেসিকে ব্যাখ্যা করার মতো নতুন কোনো শব্দ নেই। এমন স্বীকারোক্তি দিয়েছেন আর্জেন্টাইন কোচ লিওনেল স্কালোনি। এস্তোনিয়ার বিপক্ষে পাঁচ গোল করে রেকর্ডবুকে ঝড় তোলা এলএমটেন প্রথম ফুটবলার হিসেবে ক্লাব ও জাতীয় দলের হয়ে এক ম্যাচে গড়েছেন ৫ গোলের কীর্তি। প্রথম ফুটবলার হিসেবে এগারশ’ গোলে অবদান রাখেন লিওনেল মেসি।
জাতীয় দলের জার্সিতে এমন বিধ্বংসীরূপে মেসিকে আগে কখনো দেখা যায়নি। এর আগে আর্জেন্টিনার হয়ে এক ম্যাচে এই ফুটবল বিস্ময়ের সর্বোচ্চ গোল ছিল ৩টি; এবার ক্যারিয়ারের অষ্টম আন্তর্জাতিক হ্যাটট্রিকের দিনে ৭৬ মিনিটের মধ্যেই ৫ গোল করেন মেসি। ৪৭ মিনিটের মধ্যে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করার পর ৭১ ও ৭৬ মিনিটে করেন আরও ২ গোল।
বিশ্বের প্রথম এবং এখন পর্যন্ত একমাত্র ফুটবলার হিসেবে ক্লাব ও জাতীয় দল— দুই পর্যায়েইই এক ম্যাচে ৫ গোল করার রেকর্ড গড়লেন এলএমটেন। বার্সেলোনার হয়ে ২০১২ উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগে বেয়ার লেভারকুসেনের বিপক্ষে ৫ গোল করেন মেসি।
এখন পর্যন্ত, আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে মেসির গোলসংখ্যা বেড়ে হলো ৮৬টি। আর এর মাধ্যমেই তিনি পেছনে ফেললেন হাঙ্গেরির কিংবদন্তি ফুটবলার ফেরেঙ্ক পুসকাসকে। যার গোলের সংখ্যা ৮৪। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এখন চতুর্থ সর্বাধিক গোলদাতা মেসি। তার সামনে রয়েছেন মালয়েশিয়ার মুখতার দাহারি, ইরানের আলি দাই ও পর্তুগিজ তারকা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো।
রেকর্ডময় রাতে নতুন এক কীর্তিও গড়লেন এলএমটেন। প্রথম পেশাদার ফুটবলার হিসেবে ১১০০ গোলে অবদান রাখলেন তিনি। ১০৪৫ গোলে অবদান রেখে ২য় অবস্থানে আছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। অবশ্য সিআরসেভেন ১৪৭ ম্যাচ বেশি খেলেছেন। মেসি নিজে করেছেন ৭৬৯ গোল আর সতীর্থদের দিয়ে করিয়েছেন আরও ৩৩১টি। এই রাতেই মেসি পেছনে ফেলেছেন ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি পেলের করা ৭৬৭ গোলকে।
মেসির স্তুতিবাচক শব্দের অভাব বোধ করেন তার অনেক কোচই। এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হয়ে নতুন কিছু বলা সবসময়ই শক্ত। আর্জেন্টিনার কোচ লিওনেল স্কালোনি সেটাই জানালেন। তিনি বলেছেন, আমি জানি না, মেসিকে নিয়ে আর কী বলা যায়। তাকে নিয়ে নতুন কিছু বলা খুবই কঠিন, বর্ণনার আর কোনো শব্দই তো বাকি নেই। সে যা করে, সব কিছুই অনন্য। তাকে দেখাটা তৃপ্তির। আর তাকে দলে পাওয়াটা স্বস্তি জোগায়।
এস্তোনিয়ার বিপক্ষে ৫ গোল করার মাধ্যমে জাতীয় দলের জার্সিতে ভিন্ন ৩০টি দেশের বিপক্ষে গোলের কীর্তি গড়েছেন মেসি। এ নিয়ে আর্জেন্টিনা এখন টানা ৩৩ ম্যাচে অপরাজিত। শেষবার তারা ম্যাচ হেরেছিল ২০১৯ সালে। ওই বছর জুলাইয়ে কোপা আমেরিকার সেমিফাইনালে ব্রাজিলের কাছে ২-০ গোলে হারের পর থেকে অপরাজিত আর্জেন্টিনা। এরপর আলবিসেলেস্তেরা চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিলকে হারিয়েছে দুই ম্যাচে।