ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ডলারের বিপরীতে পাকিস্তানি রুপির মান সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে। মঙ্গলবার সকালের দিকে ডলারের বিপরীতে পাকিস্তানি এই মুদ্রার মান রেকর্ড ২০৩.৪৫ রুপিতে নেমেছে।
প্রাথমিকভাবে তেলের মূল্য পরিশোধ এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণ সুবিধাপ্রাপ্তি নিয়ে তৈরি হওয়া অনিশ্চয়তার কারণে রুপির মানের পতন ঘটেছে বলে দেশটির বিশ্লেষকরা মন্তব্য করেছেন।
পাকিস্তান ফরেক্স অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল পাকিস্তানি রুপির মান ডলারের বিপরীতে ২০০.৪০ থাকলেও মঙ্গলবার তা বেড়ে ২০৩.৪৫ এ পৌঁছেছে। তবে মঙ্গলবার স্থানীয় সময় বেলা সোয়া ১২টার দিকে খোলাবাজারে এক ডলারের বিপরীতে ২০৪ রুপি গুণতে হয়েছে পাকিস্তানিদের।
এর আগে, গত ১৯ মে ডলারের বিপরীতে ঐতিহাসিক পতন ঘটে পাকিস্তানি রুপির। ওইদিন দেশটির মুদ্রাবাজারে প্রথমবারের মতো ১ ডলার কিনতে খরচ করতে হয় ২০০ রুপি।
১৯৪৭ সালে ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর গত ৭৫ বছরের ইতিহাসে নিজেদের মুদ্রার এই পরিমাণ পতন দেখেনি পাকিস্তান।
চলমান অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় ৬০০ কোটি ডলারের তহবিলের জন্য যখন পাকিস্তানের সরকার আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছে তদবির করছে, সে সময়েই ঘটল মুদ্রার এই দরপতন। ২০১৮ সাল থেকেই অর্থনৈতিক সংকট চলছে পাকিস্তানে। করোনা মহামারিতে তা হয়েছে আরও তীব্র। দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকে মাত্র দেড় মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর মতো ডলার মজুত আছে।
পাকিস্তানি দৈনিক ডন বলছে, ক্রমবর্ধমান বিনিময় হার পাকিস্তানের অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে। অনিয়ন্ত্রিতভাবে আমদানি বৃদ্ধি এবং এর তুলনায় রপ্তানি বৃদ্ধির ধীর গতির কারণে ধারাবাহিকভাবে মূল্য হারাচ্ছে পাকিস্তানি রুপি।
মূলত রুপির এই মূল্যহ্রাস বাণিজ্য ঘাটতিতেও প্রতিফলিত হয়েছে। গত বছরের জুলাই থেকে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত পাকিস্তানে বাণিজ্য ঘাটতি পৌঁছেছে ৩ হাজার ৯০০ কোটি ডলারে। পাকিস্তানের মুদ্রাবাজারের ডিলাররা বলছেন, ডলারের উচ্চ চাহিদার কারণেই মূলত মার্কিন এই মুদ্রার দাম বাড়ছে। অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের দাবি, ডলারের ক্রমবর্ধমান এই মূল্য পাকিস্তানের অর্থনীতির ওপর ব্যাপক চাপ বাড়াতে পারে।