রক্ষণ আগলে রাখার ছক বেশিক্ষণ টিকল না। সেট-পিস নিয়ে যে ভীতি ছিল, তা থেকেই প্রথম গোল হজম করল বাংলাদেশ। গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকোর দারুণ কিছু সেভ সত্ত্বেও শক্তিশালী বাহরাইনের বিপক্ষে অনুমিতভাবেই হারল হাভিয়ের কাবরেরার দল।
মালয়েশিয়ার কুয়ালা লামপুরে বুকিত জলিল জাতীয় স্টেডিয়ামে বুধবার এশিয়ান কাপের বাছাইয়ে ২-০ গোলে হারে বাংলাদেশ। প্রথমার্ধেই গোল দুটি হজম করে তারা।
আগামী শনিবার ‘ই’ গ্রুপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে তুর্কমেনিস্তানের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।
ইন্দোনেশিয়ার বিপক্ষে ড্র ম্যাচের শুরুর একাদশই অপরিবর্তিত রাখেন কাবরেরা। রক্ষণ জমাট রাখতে শুরুর দিকে প্রায় সব খেলোয়াড়ই নেমে আসে নিচের দিকে। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে একটু একটু করে ছড়িয়ে খেলতে শুরু করে দল। তবে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ ছিল বাহরাইনের মুঠোয়ই।
ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের চেয়ে ৯৯ ধাপ এগিয়ে থাকা বাহরাইনকে দশম মিনিটে হতাশ করেন জিকো। কর্নারে মোহামাদ বেনাদ্দির দুর্বল হেড ড্রপ খেয়ে ছুটছিল জালের দিকে, ঝাঁপিয়ে পড়ে আটকান গোলরক্ষক, এরপর দ্রুত ক্লিয়ার করেন ডিফেন্ডার আতিকুর রহমান ফাহাদ।
২২তম মিনিটে কোমাইল হাসান আল আসওয়াদের ফ্রি কিক গ্লাভসে নেন জিকো। একটু পর আলি আব্দুল্লাহ হারামের বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া জোরাল শট ফিস্ট করে ফেরান তিনি।
২৬তম মিনিটে পাল্টা আক্রমণ থেকে সুযোগ কড়া নেড়েছিল বাংলাদেশের দরজায়, কিন্তু রাকিব হোসেনের আড়াআড়ি ক্রসে গোলমুখে সঙ্গে লেগে থাকা ডিফেন্ডারের বাধা এড়িয়ে হেড নিতে পারেননি সাজ্জাদ হোসেন। পুরো ম্যাচে বাংলাদেশ পারেনি আর তেমন কোনো সুযোগ তৈরি করতে।
২৯তম মিনিটে সতীর্থের ব্যাক হিল ফ্লিকে রাশেদ খলিলের কোনাকুনি শট আটকে আবারও দলের ত্রাতা জিকো। পাঁচ মিনিট পর আর পারেননি বসুন্ধরা কিংসের এই গোলরক্ষক। কর্নার থেকে নিখুঁত হেডে কাছের পোস্ট দিয়ে জাল খুঁজে নেন আব্দুল্লাহ হারাম।
প্রথমার্ধের শেষ দিকে বাংলাদেশের রক্ষণে প্রচণ্ড চাপ দিতে থাকে বাহরাইন। ফাহাদ-ইয়াসিন আরাফাত-বাদশারা তা সামলাচ্ছিলেন বেশ, কিন্তু এরই মধ্যে ৪২তম মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে বাঁ পায়ের জোরাল নিচু শটে আল আসওয়াদ ব্যবধান দ্বিগুণ করেন।
৫৫তম মিনিটে নিশ্চিত গোল সেভ করেন জিকো। সতীর্থের নিখুঁত পাস অফসাইডের ফাঁদ ভেঙে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে গোলরক্ষককে একা পেয়ে যান আব্দুল্লাহ ইউসুফ হেলাল। বাহরাইনের এই ফরোয়ার্ডের শট ঝাঁপিয়ে আটকান ২৪ বছর বয়সী গোলরক্ষক।
এরপর একটু একটু করে খেলার গতি কমতে থাকে। বাহরাইনের মধ্যেও ব্যবধান বাড়ানোর মরিয়া ভাব ছিল না। ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন জেনে বাংলাদেশ রক্ষণে নিজেদের মুড়িয়ে নেয় আরও বেশি করে।
দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ে ব্যবধান বাড়তে পারতো। সতীর্থের ব্যাক পাস ছুটে এসে স্লাইড করে বিপদমুক্ত করেন জিকো। কিন্তু দারুণ সব সেভ করেও ইন্দোনেশিয়া ম্যাচের মতো স্বস্তির হাসি সঙ্গী হয়নি এই গোলরক্ষকের, বাংলাদেশ দলের।
৪৪ বছর আগে ১৯৭৯ সালে প্রেসিডেন্টস কাপে বাহরাইনের বিপক্ষে আগের একমাত্র দেখায়ও একই ব্যবধানে হেরেছিল বাংলাদেশ।