বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে মুসলমানরা প্রতি বছর হজ করতে সৌদি আরবে যান। দীর্ঘ ও কষ্টসাধ্য ভ্রমণ করে ইসলামের পাঁচটি মৌলিক স্তম্ভের একটি পালন করেন তারা। আল্লাহ তায়ালার বিধানের প্রতি গভীর আস্থা দেখাতে কেউ কেউ ভিন্ন কিছু করেন—অতিরিক্ত পরিশ্রমের পথ বেছে নেন। সৃষ্টিকর্তাকে খুশি করতে তাদের চেষ্টা দেখে বাকিরা অবাক হয়ে যান।
তাদের মধ্যে আফগানিস্তানের নাগরিক নুর আহমেদ একজন। বাইসাইকেল চালিয়ে হজ পালন করতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। আর্থিক সামর্থ্য থাকলেও যারা হজ পালন করছেন না, তাদেরও উৎসাহিত করতে চান নুর আহমেদ।
এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের খবর বলছে, হজযাত্রায় তিনি কারও সহায়তা চান না। কেবল নিজের যা আছে, তা নিয়েই আল্লাহকে খুশি করতে সাইকেল চালিয়ে সৌদি যাচ্ছেন।
হজের প্রতি তার আবেগ দেখে আফগান সরকার তাকে একটি বিমানের টিকিটও দেয়, যাতে কষ্ট না করে ইসলামের মৌলিক বিধানটি পালন করে আসতে পারেন। কিন্তু এতে তিনি যেভাবে সাড়া দিয়েছেন, তা সবাইকে অভিভূত করে দিয়েছে। তিনি সরকারের দেওয়া টিকিট ফেরত দিয়েছেন।
নুর আহমেদ বললেন, আমার যা অবলম্বন আছে, তা নিয়েই আমি হজ করতে চাই। এভাবেই আমি মহান আল্লাহর নির্দেশ পালনে আগ্রহী।
যে কারণে বিমানে সৌদিতে গিয়ে হজ পালনের সুযোগ পেয়েও তিনি তা হাতছাড়া করেন। যেহেতু তিনি নিজে সাইকেল চালিয়ে হজ করতে যাবেন, সেহেতু তাকে ইরান ও ইরাকের ভিসা পেতে হবে। দুই দেশের ভিসা তিনি পেয়ে যাবেন বলেও আশা করছেন। নুর আহমেদের ইচ্ছার কথা শুনে অবাক হয়ে এক হজযাত্রী বলেন, সবাই তার জন্য দোয়া করবেন।
তবে বাইসাইকেলযোগে এবারই প্রথম কেউ হজ পালন করছেন না। ২০১৯ সালে আট ব্রিটিশ নাগরিক এই দুই চাকার যান চালিয়ে চালিয়ে হজ করতে যান। সৌদিতে পৌঁছাতে তাদের দুই মাস লাগে তখন।
স্টেপফিড নামের একটি ওয়েবসাইট বলছে, ব্রিটিশ হজযাত্রীরা সতেরোটি দেশ পার হয়ে সৌদিতে যান। দলটির নেতা ছিলেন তাহের আখতার। এ সময়ে তাদের যে ঝড়, বৃষ্টি, আর্দ্রতা, বৈরী আবহাওয়া ও অক্সিজেন সংকটে পড়তে হয়েছে, সেই বিবরণ দিয়েছেন তিনি।
এতে কখনো-কখনো তাদের হিংস্র প্রাণীর মুখোমুখি হতে হয়েছিল বলে জানান তাহের আখতার। তিনি বলেন, বাধাবিপত্তি থাকলেও এ সফর ছিল আল্লাহর জন্য। কাজেই এটি ছিল এক অসাধারণ ভ্রমণ।