দেশের ক্রিকেটের সব থেকে জৌলুসপূর্ণ টুর্নামেন্ট বিপিএল। এক দশক পেরিয়ে আসার পরও টুর্নামেন্টটি পরিপূর্ণ একটা কাঠামোতে দাঁড়াতে পারেনি। সব ঠিক থাকছে না- কখনও নভেম্বর-ডিসেম্বর আবার কখনও জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টটি মাঠে গড়িয়েছে। আসছে বছর বিপিএলের নবম আসরটি জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারির সøটে আয়োজনের পরিকল্পনা করে রেখেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। সেই পরিকল্পনায় কোনো পরিবর্তন আনার ভাবনা সংস্থাটির নেই। বুধবার মিরপুরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন জানিয়েছেন, নির্ধারিত সময়েই মাঠে গড়াবে বিপিএলের নবম আসর।
খসড়া সূচি অনুযায়ী ২০২৩ সালের ৩ জানুয়ারি শুরু হয়ে ১৭ ফেব্রুয়ারি শেষ হবে নবম বিপিএল। কাছাকাছি সময়েই শুরু হওয়ার কথা পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল), যেমনটা এ বছরের শুরুতে হয়েছিল। অস্ট্রেলিয়ার বিগব্যাশ এবং প্রস্তাবিত দক্ষিণ আফ্রিকান লিগও থাকছে একই উইন্ডোতে। এরই মধ্যে আবার জানুয়ারিতেই ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ আয়োজনের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। ওই লিগে অংশ নেওয়ার জন্য দল কিনেছে আইপিএলের মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স, কলকাতা নাইট রাইডার্স আর দিল্লি ক্যাপিটালসের মালিকপক্ষ। শুধু তাই নয়, ঐতিহ্যবাহী ইংলিশ ফুটবল ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মালিকপক্ষও এই লিগে দল কিনেছে। এই লিগ অনেক বেশি আলো কাড়বে বলেই ধারণা। যদি তাই হয়, তা হলে তারকা ক্রিকেটাররাও সেখানে খেলতে আগ্রহী হবেন।
একই উইন্ডোতে বেশ কয়েকটি লিগ, এতে ভালো মানের বিদেশি ক্রিকেটার পাওয়া নিয়ে শঙ্কা থাকছে। তবে শঙ্কা থাকলেও বিপিএলের সূচি পরিবর্তনের কোনো ভাবনা বিসিবির নেই। এ প্রসঙ্গে নিজামউদ্দিন বললেন, ‘আমাদের যে আন্তর্জাতিক আর এফটিপি কমিটমেন্ট, তার ওপর নির্ভর করেই বিপিএলের সূচি করে থাকি। আমাদের নির্ধারিত সূচি অনুযায়ীই আলোচনা করতে হবে। আমাদের আন্তর্জাতিক ব্যস্ততা আছে আগে-পরে। খুব আঁটসাঁট সূচি নিয়ে কাজ করতে হয়। আমরা আমাদের সূচি মেনেই কাজ করব।’
নভেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত চলবে টি-টোয়েন্টি বিশ^কাপ। এর পরপরই দুটো টেস্ট আর তিনটি ওয়ানডে খেলতে আসার কথা রয়েছে ভারতের। তা ছাড়া জানুয়ারিতে বিপিএল শুরু হলে সূচি সমন্বয় করে তিনটি ওয়ানডে খেলতে ডিসেম্বরের শেষভাগে বাংলাদেশ সফরের ভাবনা আছে ওয়েস্ট ইন্ডিজেরও। টাইগারদের ব্যস্ততা থাকবে আগামী বছরজুড়েই। সার্বিক দিক বিবেচনায় খসড়া সূচি অনুযায়ী জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে বিপিএল আয়োজন করা ছাড়া আপাতত উপায় নেই বিসিবির, নিজামউদ্দিনের কথাতেও সেটা পরিষ্কার। ভারত সিরিজের সূচি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেছেন, ‘এ বছরের এপ্রিলে এফটিপি ডেভেলপের একটা মিটিং ছিল। সেখানে শুধু ২০২২ না, ২০২৭ পর্যন্ত এফটিপি কী হবে, এ নিয়ে কাজ শুরু করেছি। কাজ চলছে। আপনারা যেভাবে জানেন সিরিজগুলো সেভাবেই নির্ধারণ করা আছে। আশা করছি নির্ধারিত সময়েই সিরিজগুলো আয়োজন করা যাবে।’
তবে ২০২৭ সাল পর্যন্ত যে এফটিপি তৈরি করা হচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশের ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া সফর আছে কি না, তা পরিষ্কার করে জানাতে পারেননি বিসিবির প্রধান নির্বাহী, ‘২০২৭ পর্যন্ত যে এফটিপি চূড়ান্ত করা হয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে সফর করিনি এমন সফর সেখানে বিবেচনাধীন। সেভাবেই আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলছি। আশা করছি আশানুরূপ কিছু হবে।’