পটুয়াখালীর গলাচিপায় বিয়ে বাড়িতে বেয়াইনের সঙ্গে কথা বলায় দুই যুবকের মাথা কামিয়ে আলকাতরা লাগিয়ে গ্রাম ছাড়া করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ইউপি সদস্য (মেম্বার) মো. সায়েম গাজীর বিরুদ্ধে।
এদিকে এ ঘটনার বিচার না হলে আত্মহত্যা করার হুমকি দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
মঙ্গলবার (৭ জুন) উপজেলার চরবিশ্বাস ইউনিয়নের চর বাংলা গ্রামের বাসিন্দা তাহিদুল মৃধার চর আগস্তির নূরু সরদারের মেয়ে মুক্তার বিয়ের অনুষ্ঠানে এ ঘটনা ঘটে। চর মহিউদ্দিন নামক স্লুইসগেট সংলগ্ন আবাসনে বিয়ের খাবার খাওয়ানোর সময় এ ঘটনা ঘটে।
বুধবার (৮ জুন) বিকেলে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।
ভুক্তভোগীরা জানান, দুপুরে খাওয়ার পরে গ্রামের রাস্তায় হাঁটতে গিয়ে এক বেয়াইনের সঙ্গে দেখা হলে কথা বলেন তুহিন ও কালু।
পরে বিয়ে বাড়ির লোকজনের মধ্যে বিষয়টি জানা জানি হলে মেয়ের আপন ভাই ও স্থানীয় জনগণ মিলে ওই দুই যুবককে ধরে স্লুইসগেট বাজারে ৮ নং ওয়ার্ডের স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য মো. সায়েম গাজীর অস্থায়ী কার্যালয়ে নিয়ে যান।
পরে তাদের জিজ্ঞাসা শেষে জনসম্মুখে ইউপি সদস্য সায়েম গাজীর নির্দেশে মো. হযরত মাঝি ও হাদী হাওলাদার মিলে চরবাংলা গ্রামের মো. ইউসুব হাওলাদারের ছেলে মো. তুহিন ও লিটন গাজীর ছেলে কালুর মাথা কামিয়ে আলকাতরা লাগিয়ে গ্রাম ছাড়া করেন। লোকলজ্জার ভয়ে পালিয়ে ছিলেন দুই যুবক।
ভুক্তভোগী কালুর বাবা মো. লিটন গাজী বলেন,
আমার ছেলে এমন কি অপরাধ করেছে, যার কারণে মাথা কামিয়ে আলকাতরা দিয়েছে? তারা ঘটনার পরে লোকলজ্জায় জঙ্গলে লুকিয়ে ছিল। পরে জঙ্গলে গিয়ে আত্মহত্যার হাত থেকে ওই দুই যুবককে রক্ষা করে পরিবার। কখন কি ঘটে আল্লাহই জানেন। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।
এদিকে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য মো. সায়েম বলেন, আমি যে মাথা কামানোর বিষয়টি ঘটিয়েছি, তার কোনো ভিডিও ফুটেজ আছে? আপনাদের কাছে কোনো প্রমাণ আছে? আমি ওদের মাথা কামানোর সঙ্গে জড়িত নই।
অভিযুক্তদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি জানান স্থানীয়রা।
চরবিশ্বাস ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. তোফাজ্জেল হোসেন বাবুল মুন্সী বলেন, আমি ঘটনা শুনছি, ওই দুই যুবক বিয়ের বরযাত্রী ছিল, বিয়ে বাড়িতে কোনো এক মেয়ের সঙ্গে তাদের কথা বলতে দেখেন স্থানীয়রা। এ বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটি হলে তাদের ধরে মাথা কামিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে ভুক্তভোগী পরিবার আমাকে জানিয়েছে। এটা ঠিক হয়নি, এটি মানবাধিকার লংঘন।
গলাচিপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম আর শওকত আনোয়ার ইসলাম বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছি। ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তবে এখনও কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।