মহানবী হজরত মুহাম্মদ সা: ও তার স্ত্রী হজরত আয়েশা রা:-কে নিয়ে বিজেপির দুই নেতার বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে বিশ্বের মুসলিম দেশগুলোর তোপের মুখে পড়েছে ভারত সরকার। চাপের মুখে দল থেকে ওই দুই নেতাকে বহিষ্কার করেছে বিজেপি। কিন্তু চলমান ক্ষোভ প্রশমিত হয়নি। মুসলিম দেশগুলোর পক্ষ থেকে বিরাট বাণিজ্য-বাধার সম্মুখীন হওয়ার আশঙ্কায় ভারত।
অবশেষে ঘটনার ১০ দিন পর নূপুর শর্মা ও নবীন কুমার জিন্দালের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দিল্লির পুলিশ। ওই দু’জনই দিল্লির বাসিন্দা। এছাড়া আরো কয়েকজনের নাম এসেছে পুলিশের করা ওই মামলায়।
বরখাস্ত হওয়া বিজেপি নেতা নূপুর শর্মা এবং নবীন জিন্দালের পাশাপাশি সাংবাদিক শাবা নকভি, সংখ্যালঘু নেতা শাদাব চৌহান, ধর্মীয় নেতা মৌলানা মুফতি নাদিমের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার আনন্দবাজার অনলাইন এ খবর জানিয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, বিজেপির মুখপাত্র, একজন সাংবাদিক, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারী এবং বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠনের সদস্যদের নাম উল্লেখ করে দুটি এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ঘৃণামূলক বক্তব্য, ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলোকে উসকানি এবং সমাজের শান্তি ও সম্প্রীতি নষ্ট করে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টির অভিযোগ আনা হয়েছে।
সম্প্রতি ভারতের স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেল টাইমস নাউ ওয়ান-এ মহানবী সা: ও তার স্ত্রী আয়েশাকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেন বিজেপির মুখপাত্র নূপুর শর্মা। পরে নূপুর শর্মার ওই মন্তব্য সমর্থন করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে একটি পোস্ট দেন দলটির দিল্লি শাখার মিডিয়া ইউনিটের প্রধান নবীন কুমার জিন্দাল।
এ ঘটনার পরপরই ভারতের স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের পাশাপাশি তীব্র প্রতিক্রিয়া জানাতে শুরু করে বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম দেশ। ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাক দেয় কয়েকটি আরব দেশ। এমনকি কুয়েতের কিছু দোকানের তাক থেকে ভারতীয় পণ্য সরিয়ে ফেলা হয়।
রোববার (৫ জুন) আরব দেশগুলোতে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূতদের ডেকে পাঠিয়ে এর প্রতিবাদও জানানো হয়। ইসলামবিদ্বেষী মন্তব্যের কারণে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও প্রতিবাদ জানাতে শুরু করেন অনেকে।
এ ছাড়া মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য ভারত সরকারের পক্ষ থেকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানায় ইরান, আফগানিস্তান, ইন্দোনেশিয়া ও পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশ।
কিন্তু এত কিছুর পরও এ বিষয়ে পুলিশ কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় ভারত সরকারের অবস্থান নিয়েও প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন অনেকে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
এর আগে সোমবার (৬ জুন) এক সংবাদ সম্মেলনে বহুল সমালোচিত এ ইস্যুতে জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বলেন, আমরা দৃঢ়ভাবে সব ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা ও সহনশীলতাকে উৎসাহিত করি।
সূত্রঃ নয়াদিগন্ত