নজিরবিহীন জ্বালানি ঘাটতি মোকাবিলায় রাশিয়া থেকে আরও তেল আমদানিতে বাধ্য হতে পারে শ্রীলঙ্কা। এক গণমাধ্যমে দেয়া সাক্ষাৎকারে এ কথা জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে। শ্রীলঙ্কার চলমান খাদ্যসংকট মোকাবিলায় দেশটিতে রাশিয়া গম রফতানির প্রস্তাব দিয়েছে বলেও জানান তিনি।
দেশের ইতিহাসে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকট পার করছে এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা। খাদ্য, জ্বালানি ও ওষুধের মতো গুরুত্বপূর্ণ আমদানি ব্যয় পরিশোধে ডলার ঘাটতিতে পড়েছে দেশটি। এরই মধ্যে জ্বালানির অভাবে বিদ্যুৎসংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে।
বর্তমানে শ্রীলঙ্কার পেট্রল স্টেশনগুলোর সামনে যানবাহনের দীর্ঘ সারি নিয়মিত দৃশ্যে পরিণত হয়েছে। কখনো এই সারি কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত ছাড়িয়ে যায়। চাপ কমাতে গাড়িচালকদের জন্য সাপ্তাহিক তেলের কোটাও ঘোষণা করেছে সরকার।
যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্ররা যখন রাশিয়ার যুদ্ধ চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের প্রবাহ কমানোর চেষ্টা করছে, তখন রাশিয়া বিভিন্ন দেশকে ব্যাপক ছাড়ে অপরিশোধিত তেল বিক্রির প্রস্তাব দিচ্ছে। এমন প্রস্তাবে অনেক দেশ রাশিয়া থেকে তেল আমদানিতে উৎসাহিত হচ্ছে। শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী বিক্রমাসিংহে একই সঙ্গে দেশের অর্থমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করছেন।
অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণ করতে রাশিয়া থেকে তেল আমদানিও করেছে দেশটি। এরপরও সংকট সমাধানে অন্য উৎস খুঁজছে বিক্রমাসিংহে সরকার। যদি তা না পাওয়া যায়, তাহলে রাশিয়া থেকে আরও তেল আমদানিতে বাধ্য হতে পারে শ্রীলঙ্কা। শনিবার (১১ জুন) এক সাক্ষাৎকারে দেশটির প্রধানমন্ত্রী এই কথা জানিয়েছেন। তিনি আরও জানিয়েছেন, শ্রীলঙ্কার বর্তমান দুর্দশা ‘নিজেদের তৈরি’ এবং ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতিকে আরও অবনতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের জ্বালানির প্রয়োজন। সবার সঙ্গে যোগাযোগ করছি। বিকল্প উৎস না পেলে হয়তো রাশিয়ার কাছ থেকে নিতে হতে পারে।’
সাক্ষাৎকারে, দেশের অর্থনৈতিক সংকট নিরসনে চীন থেকে আরও আর্থিক সহায়তা নেয়ার ইঙ্গিতও দিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে শ্রীলঙ্কার চলমান খাদ্যসংকট মোকাবিলায় রাশিয়া দেশটিতে গম রফতানির প্রস্তাব দিয়েছে বলেও জানান বিক্রমাসিংহে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের অর্থনৈতিক অবস্থা চীনকে জানানো হয়েছে। তাদের নিজস্ব একটি সিস্টেম আছে। সেই অনুসারেই তারা সহযোগিতা করে থাকে।’
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর কাছ থেকেও তেল ও কয়লা পাওয়ার চেষ্টা করে আসছে শ্রীলঙ্কা।