ইন্দো-প্যাসিফিক ইকোনোমিক ফ্রেমওয়ার্কে (আইপিইএফ) বাংলাদেশকে যুক্ত করতে তৎপর যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা। বলা যেতে পারে, ভূকৌশলগত কারণে এই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান অগ্রাধিকার এটি। বিশ্লেষকদের ধারণা, মূলত চীনকে চাপে রাখতেই ওয়াশিংটনের এই তৎপরতা।
জাপান বলছে, এই উদ্যোগে যুক্ত হলে লাভবান হবে বাংলাদেশ। আর চীনের ভাষ্য, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন এই উদ্যোগ এ অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে পারে।
তবে, এ বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি সরকার। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বাড়তি কোনো সুবিধা না পেলে আইপিইএফ-এ যুক্ত হবে না বাংলাদেশ।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম জানান, আইপিইএফ-এ যোগ দিলে বাংলাদেশ কী অর্থনৈতিক সুবিধা পাবে, সেটির উপর সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে। প্রশ্ন রেখে বলেন, কোনো সুযোগ-সুবিধা ছাড়া আমরা কেন একটি জায়গায় যেতে চাইব?
আর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, আমাদের দেশের মঙ্গল যেটা, দেশের স্বার্থ যেভাবে রক্ষিত হয় সে অনুযায়ী কাজ করব। অন্যান্য দেশের অনেক লোক সুপারিশ করতে পারে।
গেল মাসে জাপান সফরে গিয়ে নতুন অর্থনৈতিক উদ্যোগ আইপিইএফ এর ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। জাপান ছাড়াও ভারত ও অস্ট্রেলিয়াসহ ১২ দেশ শুরু থেকেই সহযাত্রী যুক্তরাষ্ট্রের।
এই জোটের উদ্যোক্তারা বলছেন, জ্বালানি নিরাপত্তাসহ এই অঞ্চলের দেশগুলোর ডিজিটালাইজেশন নিশ্চিত করে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা এর লক্ষ্য।
ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগ এটি। মূলত এই অঞ্চলের দেশগুলোর অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতেই এই চেষ্টা। বাংলাদেশও যুক্ত হলে লাভবান হবে।
তবে শুরু থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের এই উদ্যোগের বিরোধিতা করছে চীন। শান্তিপূর্ণ ও স্থিতিশীল এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে নতুন কোনো জোটের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি এ বিষয়ে বাংলাদেশ যৌক্তিক সিদ্ধান্ত নেবে বলে আশাবাদী ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং।
অকাস, কোয়াড বা আইপিইএফ ছাড়াই এ অঞ্চলে আমরা ভালো আছি। হঠাৎ করে এগুলো কেন দরকার হচ্ছে? আমি বিশ্বাস করি, এ নিয়ে ঠিক সিদ্ধান্ত নেবে বাংলাদেশ।
সম্প্রতি ঢাকা-ওয়াশিংটন অর্থনৈতিক সংলাপে আইপিইএফ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছে দু’পক্ষ। মূলত লাভ-ক্ষতির হিসেব এখনো যাচাই-বাছাই করছে বাংলাদেশ।
এদিকে অবশ্য বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার সদস্য হলেও জিএসপি সুবিধা বাতিল হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শুল্কমুক্ত ফিরে না পাওয়ায় হতাশ বাংলাদেশ।