শুরুর ১০ মিনিটে ম্যাচ শেষ করে দিতে চাইবে মালয়েশিয়া-কোচ হাভিয়ের কাবরেরার সতর্কবাণী। তাতে অবশ্য টলছেন না অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। তরুণ দল নিয়ে শক্তিশালী মালয়েশিয়াকে আটকে দেওয়ার জন্য ‘আলাদা পরিকল্পনা’ থাকার কথা আত্মবিশ্বাসী কণ্ঠে জানালেন তিনি।
কুয়ালা লামপুরের বুকিত জলিল জাতীয় স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার এশিয়ান কাপের বাছাইয়ে নিজেদের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হবে দুই দল। বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭টায় মাঠে গড়াবে ম্যাচটি। দুই ম্যাচে একটি করে জয় ও হার মালয়েশিয়ার। দুটিতেই হার বাংলাদেশের।
কাঙ্ক্ষিত সাফল্য না মিললেও জামালকে আশা দেখাচ্ছে দলের উন্নতির ধারাবাহিকতা। চোটের কারণে সাত সতীর্থকে হারানোর পর তরুণদের নিয়ে মালয়েশিয়ায় নোঙর ফেলে দল। তার আগে ইন্দোনেশিয়ায় একটি প্রীতি ম্যাচও খেলে; বাংদুংয়ের ওই ড্র ম্যাচ থেকে বাংলাদেশ খেলছে সাহসী ও পরিকল্পিত ফুটবল।
বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) মাধ্যমে সোমবার পাঠানো ভিডিও বার্তায় জামালও জানালেন তরুণদের উপর আস্থা রাখার কথা।
“বয়সের গড়ে আমাদের দলটা বেশ তরুণ। দলে অনেক তরুণ ফুটবলার আছে, যারা কয়েক বছর ধরে খেলছে। ব্যাক লাইনের দিকেই দেখুন, সেখানে বেশ কয়েকজন তরুণ ফুটবলার আছে। তারা ভালো ফুটবলার। কারও ব্যক্তিগত নৈপুণ্য আমাদের শক্তির জায়গা নয়। আমরা দলগতভাবে খেলি। আমরা যদি দলীয়ভাবে সেরাটা দিতে পারি তাহলে ভালো কিছু আশা করা সম্ভব।”
“সব সময়ই খেলোয়াড়দের বলি, নিজের জন্য খেলো, তোমার সতীর্থ আর দলের জন্য খেলো। যখন তুমি জাতীয় দলের ফুটবলার, তখন তুমি শুধু জাতীয় দলেরই প্রতিনিধিত্ব করছ না, প্রায় ২০ কোটি মানুষের প্রতিনিধিত্ব করছ। প্রতিটা ট্যাকল, প্রতিটা গোল শুধু তোমার একার নয়- দেশের, বাংলাদেশের মানুষের। আগামীকালও তাই। আমরা বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছি। সেরাটা দিয়ে বাংলাদেশের মানুষকে গর্বিত করতে হবে। আর আমরা সেটাই করতে চাই। দেশের মানুষকে একটা ভালো ফল উপহার দিতে চাই।”
ভালো খেলেও তুর্কমেনিস্তানের বিপক্ষে ২-১ গোলে হারের হতাশা এখনও ভুলতে পারেনি বাংলাদেশ। জামালের কথায় ফের উঠে এলো সেই পীড়াদায়ক ম্যাচের স্মৃতি। যার পুনরাবৃত্তি মালয়েশিয়া ম্যাচে চান না অধিনায়ক।
“সেদিন (তুর্কমেনিস্তান ম্যাচ) অনেকেই মাটিতে শুয়ে পড়েছিল হতাশায়, কারণ সবাই বিশ্বাস করতে শুরু করেছিল যে আমাদের ম্যাচটা জেতা সম্ভব ছিল। জেতার মতো অনেকগুলো ভালো সুযোগ পেয়েছিলাম। তুর্কমেনিস্তানকে আমরা খুব ভালো খেলতে দেইনি। আর এই কারণেই সবাই হতাশায় মাঠে শুয়ে পড়েছিল।”
“সবাই মন থেকে বিশ্বাস করতে শুরু করেছিল আমাদের জেতার সুযোগ ছিল। ম্যাচ শেষে, গতকালকেও এ নিয়ে আমি কথা বলেছি। জীবনে এমনটা হতেই পারে। সুযোগ যখন আসে, সেটা কাজে লাগাতে হবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আমরা সেটা পারিনি। তবে আমরা ম্যাচটা থেকে শিখেছি এবং সেটা পরের ম্যাচে কাজে লাগাব।”
কোচের মতো জামালও মনে করেন ‘চাপ’ থাকবে মালয়েশিয়ার উপরই। ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে খেলার ধরনে মালয়েশিয়ার পার্থক্য দেখছেন না তিনি। দলের প্রতি অধিনায়কের বার্তা আনন্দচিত্তে মাঠে নেমে কোচের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের।
“মালয়েশিয়ার খেলা অনেকটা ইন্দোনেশিয়ার মতোই। অবশ্যই তাদের জন্য আমাদের আলাদা পরিকল্পনা আছে। আমরা কী করব সেটা নিশ্চয়ই এখানে প্রকাশ করব না, তবে সব কিছুর জন্যই আমাদের পরিকল্পনা সাজানো আছে। কালকে সেই পরিকল্পনা ধরেই এগোব। আমরা জানি তাদের দ্রুত গতির কয়েকজন ফুটবলার আছে। কোচ তাদের জন্য আলাদা পরিকল্পনা তৈরি করেছেন। আমাদের পরিকল্পনা কাজে লাগাতে হবে। সেই পরিকল্পনা যদি কাজে লাগানো যায় তাহলে হয়তো আমরা মালয়েশিয়াকে হারাতেও পারি।”
“আমাদের দলটা প্রায় ৩০ দিন ধরে একসঙ্গে আছে। আমরা আমাদের সফরটা ভালো একটা ফলাফল দিয়ে শেষ করতে চাই। খেলোয়াড়েরা ভালো একটা ম্যাচ উপহার দিতে মুখিয়ে আছে। কারণ আমরা স্বাগতিক দলের বিপক্ষে খেলব। জানি অনেক দর্শক হবে। আমাদের জন্য অন্য রকম অনুপ্রেরণা হবে। কিন্তু আমরা মনের আনন্দের জন্য খেলি, কালকেও আনন্দ নিয়ে খেলব।”