চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ এবং বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়ার পর উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। একই সঙ্গে স্নাতক পর্যায়ের ক্লাস ও পরীক্ষা আগামী ৭ জুলাই পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
এছাড়াও স্নাতকের ছাত্রদের আজ মঙ্গলবার বিকাল ৫টার মধ্যে এবং ছাত্রীদের আগামীকাল বুধবার সকাল ১০টার মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত চুয়েটের এক জরুরি সভার পর সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
এর আগে ক্যাম্পাসে উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে দুপুরে উপাচার্যের সভাপতিত্বে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সব অনুষদের ডিন, ইন্সটিটিউটের পরিচালক, রেজিস্ট্রার, বিভাগীয় প্রধান, প্রভোস্ট এবং ছাত্রকল্যাণ পরিচালক সভায় উপস্থিত ছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. ফারুক-উজ-জামান চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘১৪ জুন থেকে আগামী ৭ জুলাই পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক পর্যায়ের পরীক্ষাসহ সকল একাডেমিক কার্যক্রম এবং আবাসিক হলগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হল।’
চুয়েটের ছাত্রকল্যাণ পরিচালক মো. রেজাউল করিম বলেন, গত কয়েকদিনের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে স্নাতক পর্যায়ের ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। ছাত্র ও ছাত্রীদের হল ছেড়ে যেতে আলাদা সময় নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। তবে স্নাতকোত্তর পর্যায়ের ক্লাস-পরীক্ষা চলবে। তবে ৭ জুলাই পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হলেও এরপর শুরু হবে কোরবানির ঈদের ছুটি। ফলে ১৪ জুলাই ঈদের ছুটি শেষ হলে তারপরই স্নাতকের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হবে।
জানা যায়, ছাত্রলীগের সংঘর্ষের জেরে আজ সকাল থেকে ক্যাম্পাসে হেলমেটধারীরা টহল দিয়েছে। ভোর পাঁচটা থেকে সশস্ত্র অবস্থায় হলুদ হেলমেট পরা ১৫-২০ জনের একটি দল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা চত্বরে অবস্থান করার খবর পাওয়া যায়। হেলমেটধারী ওই তরুণদের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২টি বিভাগের কোনো শিক্ষার্থী ক্লাসে যেতে পারছেন না বলেও অভিযোগ পাওয়া যায়।
অন্যদিকে, আজ সকাল ছয়টায় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারী পরিবহনের বাস চট্টগ্রাম শহরের উদ্দেশে রওনা দিলে হেলমেটধারীরা বাসগুলো আটকে পুনরায় গ্যারেজে ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছেন। দুই পক্ষের মারামারির পর গতকাল সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ বিভাগের ২ হাজার ৮০০ শিক্ষার্থী ক্লাস বর্জন করেছিলেন।