সম্প্রতি পুরুষের জন্য বিশেষভাবে তৈরি একটি নতুন ননহরমোনাল গর্ভনিরোধক ট্যাবলেট মাউস টেস্টিংয়ে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই গর্ভাবস্থা প্রতিরোধে ৯৯ শতাংশ কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে।
পুরুষের জন্য উল্লেখযোগ্যভাবে কম বিকল্প থাকায় এই ওষুধটি যুগান্তকারী গর্ভনিরোধক হতে পারে বলে অনেকেই মনে করছেন। তবে কিছু কিছু বিশেষজ্ঞ এই ওষুধটির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে এখনও উদ্বিগ্ন থাকায় ওষুধটি বাজারে আসতে পারেনি। জনস্বাস্থ্যের নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে এই ওষুধটি নিয়ে এখনও গবেষণা চলছে।
মিনিয়াপলিসের মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয়ের মো. আবদুল্লাহ আল নোমানের মতে, অনেক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও মানুষের ক্লিনিকাল ট্রায়ালের মাধ্যমে কোনও কার্যকর এবং নিরাপদ পুরুষ গর্ভনিরোধকের বেশিরভাগই হরমোনের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। তবে হরমোনবিহীন গর্ভনিরোধক ওষুধের ক্ষেত্রে এটিই প্রথম।
ওষুধটির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া পরীক্ষা করার জন্য মাউস টেস্টিং অর্থাৎ ইঁদুরের ওপর গবেষণা চালানো হয়েছে। এর জন্য চার সপ্তাহের ব্যবধানে বিজ্ঞানীরা পুরুষ ইঁদুরকে ওয়াই সি টি ৫২৯ নামক রাসায়নিকের দৈনিক ডোজ দিয়েছিলেন। এরপর বিজ্ঞানীরা পর্যবেক্ষণ করে যে ইঁদুরগুলোর শুক্রাণুর সংখ্যা আশানুরূপ কমে গেছে।
গবেষণার কাজে বিজ্ঞানীরা আবার ইঁদুরের ওপর ওষুধের ডোজ দেওয়া বন্ধ করার চার থেকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে ইঁদুরগুলো আবার সঠিকভাবে শুক্রাণু উৎপাদনে সক্ষম হলে বিজ্ঞানীরা এই ওষুধকে নেতিবাচক প্রভাব ছাড়াই কার্যকর বলে সিদ্ধান্ত নেয়।
তবে একাধিক ক্লিনিকাল ট্রায়ালগুলোতে দেখা গেছে, এই ওষুধ পুরুষ যৌন হরমোন টেস্টোস্টেরনকে প্রভাবিত করতে পারে। যার ফলশ্রুতিতে ওজন বৃদ্ধি, বিষণ্নতা এবং অন্যান্য নেতিবাচক প্রভাবগুলো পুরুষের মধ্যে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে বিশেষজ্ঞরা।
এ বিষয়ে নোমান বলেন, জন্মনিয়ন্ত্রণ পিলের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ মানুষ কোনো রোগের জন্য এগুলো গ্রহণ করছে না। তাই এই ধরনের ওষুধ কম পরিমাণে সহনশীল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া যুক্ত হওয়া উচিত। আর তাই ওষুধটির মান উন্নয়নে ক্লিনিকাল গবেষণা এই বছরের দ্বিতীয়ার্ধে শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সূত্র: ওয়ার্ল্ড ইজ ওয়ান নিউজ (ডব্লিউআইওএন)।