কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন সাবেক মেয়র ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু।
ভোট সুষ্ঠু হলে জয়ী হব, তবে ইভিএম ডিস্টার্ব করছে: সাক্কু
বুধবার (১৫ জুন) সকাল সাড়ে ৯টায় নিজ কেন্দ্র হোচ্চা মিয়া উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দেন তিনি।
ভোট প্রদান শেষে মনিরুল হক সাক্কু বলেন, ‘ভোটের পরিবেশ মোটামুটি সুষ্ঠুই দেখছি। তবে মেশিনগুলো ডিস্টার্ব করছে। মেশিনে টিপ দিলে (প্রতীকের) ছবি উঠছে না। প্রিসাইডিং অফিসারকে বিষয়টি জানিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘বৃষ্টি হচ্ছে; আবহাওয়া অনুকূল না থাকায় মানুষ কেন্দ্রে আসতে পারছে না। তবে ভোট সুষ্ঠুভাবে হলে জয়ী হব; জনগণের রায় যা হবে মেনে নেব।’
এদিকে নগরজুড়ে বাড়তি পুলিশ ও র্যাব সদস্যদের উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে। ভোটকেন্দ্রের আশপাশের এলাকায় বাড়তি সতর্কতা রয়েছে।
কুসিক নির্বাচনের রিটানিং কর্মকর্তা মো. শাহেদুন্নবী চৌধুরী জানান, কেন্দ্রগুলোতে খেয়াল রাখতে কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্র থেকে সিসি ক্যামেরায় সব কার্যক্রম নজরদারিতে রাখবে কমিশন। নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে আলোচনা করে সব কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। কোনোভাবেই নির্বাচনী পরিবেশ বিশৃঙ্খল হবে না বলে আমরা আশা করছি।
এর আগে মঙ্গলবার কুমিল্লা জিলা স্কুলের শহীদ আবু জাহিদ মিলনায়তন থেকে কেন্দ্রে কেন্দ্রে ইভিএম বিতরণ করা হয়। ট্রাকে করে সকাল থেকে এই বিতরণ কার্যক্রম চলে। ১০৫টি ভোটকেন্দ্রে নিয়োগ করা ১০৫ জন প্রিসাইডিং অফিসারের মাধ্যমে ভোটগ্রহণের সরঞ্জামাদি বিতরণ করা হয়।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ২৭টি ওয়ার্ডে ১ লাখ ১৭ হাজার ৯২ নারীসহ মোট ভোটার ২ লাখ ২৯ হাজার ৯২০ জন। এবার এ নির্বাচনে ৫ মেয়র প্রার্থী, ৯টি সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৩৬ নারী কাউন্সিলর প্রার্থী এবং ২৫টি ওয়ার্ডে ১০৮ কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সিটি করপোরেশনের ২৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২টি ওয়ার্ড ৫ ও ১০নং ওয়ার্ডে একক প্রার্থী থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দুজন কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন।
সিটি করপোরেশনের নির্বাচন সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ, অবাধ ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে জেলায় ১ হাজার ২৬০ আনসারসহ ৩ হাজার ৬০৮ জন পুলিশ সদস্য নিয়োগ করা হয়েছে।
জেলা পুলিশ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ৭৫টি চেকপোস্ট, স্ট্রাইকিং ফোর্স, ৫০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, ৯ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, ১৫ প্লাটুন বিজিবি এবং র্যাব নিয়োগ করা হয়েছে।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশন প্রতিষ্ঠার পর দুটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২০১৭ সালের নির্বাচনে মোট ভোটার ছিল ২ লাখ ৭ হাজার ৫৬৬ জন। ভোট পড়েছিল ১ লাখ ৩২ হাজার ৬৯০। এর মধ্যে ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপি প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু পেয়েছিলেন ৬৮ হাজার ৯৪৮ ভোট, আর আওয়ামী লীগের প্রার্থী আনজুম সুলতানার নৌকা পেয়েছিল ৫৭ হাজার ৮৬৩ ভোট।
এর আগে সিটি করপোরেশন গঠন হওয়ার পর ২০১২ সালের প্রথম নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছিলেন প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা অধ্যক্ষ আফজল খান। সেই নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে বিজয়ী হয়েছিলেন মনিরুল হক সাক্কু।