আক্রমণে এসেই ধরলেন শিকার। পরে নিলেন আরও তিনটি। আফগানিস্তানের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রেখেই নুর আহমাদ গড়লেন রেকর্ড। বাঁহাতি এই রিস্ট স্পিনারের দুর্দান্ত বোলিংয়ে অল্প পুঁজি নিয়েও জিম্বাবুয়েকে হারিয়ে দিল আফগানরা।
হারারেতে তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে মঙ্গলবার আফগানিস্তানের জয় ৩৫ রানে।
টস জিতে ব্যাটিং করে ৮ উইকেট হারিয়ে ১২৫ রান করে মোহাম্মদ নবির দল। পরে নুরের ছোবলে এলোমেলো হয়ে যাওয়া জিম্বাবুয়ে থমকে যায় স্রেফ ৯০ রানে।
তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশড হওয়ার পর সফরকারীদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে এসেও তেতো স্বাদ পেল স্বাগতিকরা।
আফগানদের জয়ে সবচেয়ে বড় অবদান রেখে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জিতে নেন নুর। ৪ ওভারে ১০ রান দিয়ে ১৭ বছর বয়সী এই স্পিনারের শিকার ৪ উইকেট। আফগানিস্তানের হয়ে টি-টোয়েন্টি অভিষেকে যা সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড। আগের সেরা ছিল সৈয়দ শিরজাদের। ২০১৫ সালে ওমানের বিপক্ষে ১৬ রানে দিয়ে ৩ উইকেট নিয়েছিলেন বাঁহাতি এই পেসার।
প্রথম ওভারে ওয়েসলি মাধেভেরেকে চার মেরে দল ও নিজের রানের খাতা খোলেন হাজরতউল্লাহ জাজাই। পরের বলেই ওড়ান ছক্কায়। ঝড়ের আভাস দিয়ে তিনি ফিরে যান টেন্ডাই চাতারার বলে ক্যাচ দিয়ে।
অভিষিক্ত ইহসানউল্লাহ চারটি চারে ২০ রান করে ফিরে যান। পাওয়ার প্লেতে ২ উইকেট হারিয়ে ৫১ রান তোলে আফগানিস্তান।
ছন্দে থাকা নাজিবউল্লাহ জাদরান ও দলে ফেরা শরাফউদ্দিন আশরাফ বিদায় নেন দ্রুত। একটি করে ছক্কা-চারে ২৪ রান করে আউট হন আফসার জাজাই।
এক প্রান্তে কিছুক্ষণ লড়াই চালান নবি। শেষের আগের ওভারে আফগান অধিনায়ক ফেরেন ২ চারে ইনিংসে সর্বোচ্চ ৩১ রান করে।
রান তাড়ায় শুরুটা ভালোই হয় জিম্বাবুয়ের। নিজাত মাসুদের এক ওভারে ইনোসেন্ট কাইয়া ও মাধেভেরে নেন ১৮ রান। এরপর পথ হারিয়ে ফেলে দলটি। আশরাফের বলে মিড উইকেটে নুরের হাতে ধরা পড়েন মাধেভেরে (১৪)।
সপ্তম ওভারে আক্রমণে আসা নুরের প্রথম বলেই সাফল্য পায় আফগানিস্তান। রান আউটে কাটা পড়েন কাইয়া। ওভারের শেষ বলে এই স্পিনার এলবিডব্লিউ করে দেন জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক ক্রেইগ আরভিনকে।
পরের ওভারে টাডিওয়ানাশে মারুমানিকে বোল্ড করে দেন নুর। জোড়া শিকার ধরেন তিনি নিজের তৃতীয় ওভারে। ফেরান অভিষিক্ত ক্লাইন মাডান্ডে ও ডনাল্ড টিরিপানোকে।
৫৬ রানে ৭ উইকেট হারানো জিম্বাবুয়ের জয়ের আশা শেষ হয়ে যায় সেখানেই। শেষ দিকে কেবল হারের ব্যবধানই কমায় দলটি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
আফগানিস্তান: ২০ ওভারে ১২৫/৮ (জাজাই ১২, ইহসানউল্লাহ ২০, আফসার ২৪, নাজিবউল্লাহ ২, আশরাফ ৫, নবি ৩১, আজমতউল্লাহ ১১, রশিদ ২, নুর ৪*, মাসুদ ৪*; মাধেভেরে ১-০-১০-০, চাতারা ৪-০-২৪-১, টিরিপানো ২-০-২০-১, এন্ডলভু ৩-০-১৬-১, বার্ল ৪-০-২২-২, জঙ্গুয়ে ২-০-১৩-১, রাজা ৪-০-১৮-২)
জিম্বাবুয়ে: ২০ ওভারে ৯০/৯ (মাধেভেরে ১৪, কাইয়া ১২, মারুমানি ১১, আরভিন ১, রাজা ০, মাডান্ডে ২, বার্ল ১৫, টিরিপানো ০, জঙ্গুয়ে ৪, এন্ডলভু ১৩*, চাতারা ৬*; ফারুকি ৪-০-১৬-১, মাসুদ ১৩-০-২৭-০, আশরাফ ৪-০-১৩-২, আজমতউল্লাহ ১-০-১০-০, রশিদ ৪-০-৮-১, নুর ৪-০-১০-৪)
ফল: আফগানিস্তান ৩৫ রানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: নুর আহমাদ
সিরিজ: তিন ম্যাচের সিরিজ ৩-০ তে জয়ী আফগানরা
ম্যান অব দা সিরিজ: নাজিবউল্লাহ জাদরান