৭ দিনের ব্যবধানে আবারও পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হয়েছে শেরপুরের ঝিনাইগাতি উপজেলা। গতকাল বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) রাত থেকে ভারী বর্ষণ ও ভারতে মেঘালয়ের পাহাড় থেকে নেমে আসা ঢলে ঝিনাইগাতির বিস্তর অঞ্চল প্লাবিত হয়।
উপজেলার মহারশী ও সোমেশ্বরী নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে উপজেলা সদরের বিভিন্ন কার্যালয়, বাজার এলাকা এবং বিভিন্ন গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
এক রাতে উপজেলার মহারশী এবং সোমেশ্বরী নদীর পানি পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সদর, ধানাশাইল, গৌরীপুর, হাতিবান্দা ও মালিঝিকান্দাসহ ৫ ইউনিয়নের ২০ গ্রামের নিম্নাঞ্চল ডুবে গেছে। নদীর প্রবল স্রোতে এলাকার রামেরকুড়া, দিঘীর পাড়, চতল এর বেড়িবাঁধ ভেঙে উপজেলা সদর এবং আশপাশের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে। কোন রকম প্রস্ততি নেওয়ার আগেই বাড়ি ঘরে পানি ঢুকে পড়ায় কয়েক হাজার মানুষ বিপাকে পড়েছে।
এছাড়া সীমান্তের পাহাড়ি নদীর সবগুলোতেই বিপদ সীমানার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হলেও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি জামালপুর-শেরপুর পয়েন্টে এখনও বিপদ সীমানার প্রায় ৫ মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পানির চাপে শুক্রবার (১৭ জুন) সকালে রামেরকুড়া গ্রামের বাঁধের সাথে একটি বাড়ি ও পল্ট্রি খামার সম্পূর্ণ ভেসে গেছে। সেই সাথে ওই গ্রামের বেশ কয়েকটি বাড়ির মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়লে স্থানীয় ফায়ার সার্ভিস গিয়ে উদ্ধার করে। প্রবল স্রোতের কারণে অনেকেই বাড়ি থেকে বের হতে পারছেন না বলে জানা গেছে।
এদিকে উজানে ভারতের মেঘালয়ের বিভিন্ন পাহাড়ি নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পার্শ্ববর্তী নালিতাবাড়ী উপজেলার ভোগাই নদীর তীরবর্তী এলাকাগুলোতে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে বশে কয়েকটি গ্রাম ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে পড়েছে।
পানিউন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী মো. শাহজাহান জানায়, নালিতাবাড়ি ভোগাই নদী পয়েন্টে ১১৫ মিলিমিটার এবং শেরপুর সদর পয়েন্টে ৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া সীমান্তের পাহাড়ি নদীর সবগুলোতেই বিপদ সীমানার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হলেও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি জামালপুর-শেরপুর পয়েন্টে এখনও বিপদ সীমানার প্রায় ৫ মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারুক আল মাসুদ জানিয়েছেন, দ্বিতীয় দফায় উপজেলা সদরে ও বিভিন্ন গ্রামে পানি আসতে শুরু করেছে। বৃষ্টি দীর্ঘস্থায়ী হলে বন্যা ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বাড়বে। ইতোমধ্যে প্রথম দফায় বন্যার্তদের মাঝে জেলা প্রশাসনের বরাদ্দের ১৫ মেট্রিক টন চালের থেকে ১০ মেট্রিক টন বিতরণ করা হয়েছে, বাকি চালও বিতরণ করা হবে। এছাড়া বর্তমানে যারা পানি বন্দি হয়ে রয়েছে তাদের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণ করা হচ্ছে।