তিস্তার পানিবণ্টনের সমাধান না হওয়া বাংলাদেশের জন্য হতাশার এবং ভারতের জন্য লজ্জার বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন।
তিস্তা সমাধান না হওয়া বাংলাদেশের জন্য হতাশার এবং ভারতের জন্য লজ্জার: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
রোববার (১৯ জুন) দিল্লিতে যৌথ পরামর্শক কমিশনে (জেসিসি) অংশ নিতে যাওয়ার আগে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে এ মন্তব্য করেন তিনি। তবে বরাবরের মতো এবারও বাংলাদেশের বাড়তি মনোযোগ তিস্তা ইস্যু নিয়ে থাকবে বলে জানান তিনি।
বানের জলে ভাসছে উত্তরের চার জেলা। ঘরহারা বহু মানুষ। ভেসে গেছে ক্ষেতের ফসল। গবাদিপশু নিয়েও বিপাকে মানুষজন। উজানের ঢলের কারণেই এমন বিপর্যয়ের মুখে মানুষ।
তিস্তা, যে নদীর পানি নির্ধারণ করে দেশের উত্তরাঞ্চলের মানুষের ভাগ্য। এই নদীর ভারতের অংশে গজলডোবা বাঁধ নির্মাণ করায় এই অঞ্চলের মানুষের ভাগ্যেরও নিয়ন্ত্রণও সীমানার ওপারে। গ্রীষ্মকালে বাঁধের গেট বন্ধ থাকায় খরা আর পানি বেড়ে গেলে গেট খুলে দেয়ায় বন্যার সঙ্গে লড়েই প্রায় ২৫ বছর ধরে জীবনযাপন করছেন দেশের ৭টি জেলার মানুষ।
এই নদীর পানিবণ্টন নিয়ে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ে একমত থাকলেও আটকে আছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যসরকারের অনীহার কারণে। দুই দেশের প্রতিটি আলোচনায়ই তাই সর্বাধিক গুরুত্বের জায়গায় তিস্তার পানি।
প্রতি বছর বর্ষার মৌসুমে বন্যার আশঙ্কা বুকে কাঁপনি ধরায়। সম্প্রতি পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রীর কথায়ও ছিল তেমই ইঙ্গিত।
১৮-১৯ জুন ভারত-বাংলাদেশের মধ্যকার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা জেসিসিতে অংশ নিতে দিল্লি যাচ্ছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সফরের আগে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, দুই দেশের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে রাজি থাকলেও তিস্তা চুক্তি না হওয়া ভারতের জন্য লজ্জার।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমি প্রায়ই বলি এটা আমাদের জন্য দুঃখজনক আর ওদের জন্য লজ্জাজনক। সরকার তাদের রাজি করার পরেও তারা এটা বাস্তবায়ন করতে পারল না তাই এটা তাদের জন্য অবশ্যই লজ্জাজনক।
এই জেসিসি সম্মেলনে বসার কথা ছিল ৩০ মে। শেষ মুহূর্তে পেছানো হয় দুই দেশের যৌথ নদী কমিশনের বৈঠক সেরে ফেলার আশায়। প্রস্তুতির অভাবে তা সম্পন্ন না হলেও জেসিসিতেই নদীবিষয়ক আলোচনা তোলা হবে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, আমি নিজেদের থেকে সম্মতি দিয়েছিলাম যে এটা পিছিয়ে যাক। আমাদের একটু উদ্দেশ্যে ছিল যে রিভার কমিশন মিটিং। এটা অনেক দিন ধরেই হয় না। তো আমরা এবার ওটার ওপর জোর দেব যে এটা হওয়া উচিত। নদীর ব্যপারটা আমরা সবসময় তুলি এবারও তুলব।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বারবার আহ্বান জানানো হলেও গত ১১ বছর ধরে আটকে আছে দুই দেশের যৌথ নদী কমিশনের বৈঠক।