রাত ৮টার পর দোকান, শপিংমল, মার্কেট, বিপণিবিতান, কাঁচা-বাজার বন্ধের নির্দেশনা আসন্ন ঈদুল-আজহা পর্যন্ত স্থগিত রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
শনিবার বিকালে এফবিসিসিআই’তে অনুষ্ঠিত লোকাল গার্মেন্টস (অভ্যন্তরীণ পোশাক) বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠকে এ অনুরোধ জানান তারা। ব্যবসায়ীরা বলেন, কোভিডকালীন গত দুই বছরে ঈদ ও নববর্ষসহ অন্যান্য উৎসবে পুরোমাত্রায় বেচা-কেনা না হওয়ায় লোকসান গুনতে হয়েছে।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তারা বলেন, সরকারের ঘোষিত সময়োপযোগী প্রণোদনা প্যাকেজের সহায়তা নিয়ে ব্যবসায়ীরা দেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এমন অবস্থায় রাত ৮টার পর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করলে ব্যবসায়ীদের ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা ব্যাহত হবে।
ব্যবসায়ীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ঈদুল-আজহা পর্যন্ত রাত ৮টার পর দোকান, শপিংমল, মার্কেট, বিপণিবিতান, কাঁচা-বাজার বন্ধ রাখার নির্দেশনা স্থগিত রাখার আহ্বান জানান এফবিসিসিআই’র সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু। তিনি বলেন, উৎসবকেন্দ্রীক কেনা-বেচায় মূলত সন্ধ্যার পরই অফিসফেরত ক্রেতাদের সমাগম শুরু হয়। এমন প্রেক্ষাপটে রাত ৮টা পর্যন্ত কেনা-বেচা সীমিত করা হলে দেশের লাখ লাখ ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ী
ক্ষতিতে পড়বেন, একই সাথে ক্রেতা সাধারণকেও ভোগান্তি পোহাতে হবে।
এ ছাড়া বৈঠকে অভ্যন্তরীণ বাজারের পোশাক উৎপাদকদের জন্য গার্মেন্টস পল্লী স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান কমিটির সদস্যরা। তারা জানান, অভ্যন্তরীণ বাজারের জন্য পোশাক উৎপাদকদের বিভিন্ন জায়গা থেকে কাঁচামাল সংগ্রহের পর আবার প্যাকেজিং করে সেগুলো পাইকারি বাজারে বিক্রি করতে বড় অংকের অর্থ খরচ হয়। নির্ধারিত পল্লী থাকলে এ খরচ অনেকটাই কমবে, যা ক্রেতাদের আরও সুলভ মূল্যে পোশাকের চাহিদা মেটানোর জন্য সহায়ক হবে।
কমিটির সদস্যদের দাবির প্রতি একমত পোষণ করে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সহ-সভাপতি এম এ মোমেন জানান, গার্মেন্টস পল্লীর ব্যাপারে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগ নেওয়া হবে। ২০২৬ সালে এলডিসি উত্তরণের পর, ব্যবসায়ীদের বাড়তি কিছু চ্যালেঞ্জে পড়তে হবে। তার আগেই এ খাতকে আরও শক্তিশালী করার তাগিদ দেন এম এ মোমেন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন কমিটির চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ পোশাক প্রস্তুতকারক শিল্প মালিক সমিতির সভাপতি মো. আলাউদ্দিন মালিক। তিনি বলেন, স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত পোশাকের কল্যাণে বিপুল পরিমাণ আমদানি ব্যয় সাশ্রয় হচ্ছে। ব্যাংকঋণ পেলে এ খাত আরও সমৃদ্ধ হবে।
কমিটির ডিরেক্টর ইন-চার্জ আবু মোতালেব অভিযোগ করেন, রাজস্ব কর্মকর্তারা ভ্যাট আদায়ের নামে ব্যবসায়ীদের হয়রানি করছে। অবিলম্বে এসব হয়রানি বন্ধের দাবি জানান তিনি।
সভায় আরও বক্তব্য দেন এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক শফিকুল ইসলাম ভরসা ও হাফেজ হারুন। সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কো-চেয়ারম্যান হাজী এম এইচ মোস্তফা, মো. আবুল খায়ের, মো. সরোয়ার উদ্দিন খান, হাজী মো. টিপু সলতান, মো. কেফায়েতুল্লাহ টুইঙ্কল ও জুনায়েদ ইবনে আলি।