সার্বিকভাবে সিলেট ও সুনামগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতি প্রধানমন্ত্রী নিজে পর্যবেক্ষণ করছেন বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
শনিবার (১৮ জুন) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক স্ট্যাটাসে প্রতিমন্ত্রী এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘ভয়াবহ বন্যার কারণে সুনামগঞ্জ ও সিলেটের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে বিদ্যুৎ সরবরাহ সাময়িক বন্ধ রাখতে হচ্ছে আমাদের। দুর্যোগকালীন টিম গঠন করে আমরা সার্বক্ষণিক পরিস্থিতি মনিটর করছি। বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।’
‘সার্বিকভাবে সিলেট ও সুনামগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতি নিজে পর্যবেক্ষণ করছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী’।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বন্যার্তদের জন্য ইতোমধ্যে ৬০০ আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। দুই জেলার ৮ উপজেলায় স্থানীয় প্রশাসনের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর ১০ প্লাটুন এবং ৬টি মেডিকেল টিম পানিবন্দি মানুষকে উদ্ধার, আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপন, আক্রান্তদের চিকিৎসা, বিশুদ্ধ খাবার পানি ও খাদ্য সামগ্রী প্রদান এবং স্পর্শকাতর স্থাপনার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করছে।’
নসরুল হামিদ বলেন, ‘সবার সহযোগিতায় সিলেট ও সুনামগঞ্জের দুর্গত মানুষ দ্রুত পরিত্রাণ পাক এই কামনা।’
বুধবার (১৫ জুন) থেকে সিলেটের নিচু এলাকায় পানি জমে। তবে বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে তা ভয়াবহ রূপ নেয়। দুপুর ১২টা থেকে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতের মধ্যেই সিলেট নগরের বেশির ভাগ এলাকা তলিয়ে যায় বন্যার পানিতে।
২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সিলেটে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানি বাসা-বাড়ি ভাসিয়ে নিয়েছে। একদিনে বন্যার এমন ভয়াবহ রূপ আগে দেখেনি সিলেটের মানুষ। বন্যার পানির এমন আকস্মিক বৃদ্ধিতে হতভম্ব ক্ষতিগ্রস্ত লাখ লাখ মানুষ। অবাক হয়েছেন সিলেট সিটি করপোরেশনসহ স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারাও।
ভয়াবহ বন্যার শিকার লোকজন আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়েও জায়গা পাচ্ছেন না। শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকটে রয়েছেন সিলেটের বানভাসি মানুষ। এছাড়া জেলার কৃষকরা তাদের গৃহপালিত পশু নিয়ে পড়েছেন বিপাকে। এমন পরিস্থিতিতে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো মানবিক সংকট মোকাবিলায় সবাইকে সাধ্য অনুযায়ী এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে।
এদিকে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জেও দুদিন ধরে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। পাহাড়ি ঢলের পানিতে তলিয়ে গেছে সুনামগঞ্জের ১২টি উপজেলা। ফলে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৪ লাখেরও বেশি মানুষ।
এরই মধ্যে পুরো সুনামগঞ্জ শহর বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার মতো সুযোগও নেই শহরবাসীর। ফলে পানিবন্দি অবস্থায় না খেয়েই দিন পার করছেন লাখো মানুষ। অনেকে ছোট নৌকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যাচ্ছেন।