অনেকে বিভিন্ন ধরনের যৌন সমস্যায় ভুগছেন। কিন্তু প্রাথমিক পর্যায়ে বুঝতে পারছেন না এবং এমন একটা সময়ে ডাক্তারের কাছে যাচ্ছেন, যখন আসলে অনেক ক্ষেত্রে সারিয়ে তোলা সম্ভব হয় না। আজ আমরা একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছ থেকে জানব প্রিম্যাচিউর ইজাকুলেশন কেন হয়।
এনটিভির নিয়মিত স্বাস্থ্যবিষয়ক অনুষ্ঠান স্বাস্থ্য প্রতিদিনের একটি পর্বে যৌন সমস্যা সম্পর্কে বলেছেন ইউএস বাংলা মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটালের চর্ম ও যৌন রোগ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মেহরান হোসেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ডা. সামিউল আউয়াল স্বাক্ষর।
সঞ্চালকের এক প্রশ্নের জবাবে ডা. মেহরান হোসেন বলেন, প্রিম্যাচিউর ইজাকুলেশনের বাংলা, যেটা খুব কমন—দ্রুত বীর্য পতন। শুধু আমাদের দেশে নয়, সারা বিশ্বেই হাজার হাজার রোগীর কমপ্লেইন। এখানে কিছু জিনিস আমাদের মনে রাখতে হবে, কখন আমরা প্রিম্যাচিউর ইজাকুলেশন বলব। সেটা কতক্ষণ পরে। এটা নিয়ে অনেক গবেষণা হয়েছে। এটা কান্ট্রি টু কান্ট্রি, রিজিওন টু রিজিওন—জিওগ্রাফি ভ্যারি করে। যেমন আমরা জেনেটিক্যাল পরীক্ষা করে দেখি সৌদি আরবের একটা মানুষ বা আফ্রিকার একটি মানুষের কিন্তু ন্যাচারালি ইজাকুলেশন টাইমটা বেশি। এশিয়া বা সাবকন্টিনেন্টে সেটা কম। এখন পর্যন্ত কোনও বইখাতায় কোনও কনক্লুসনে যাওয়া যায় না যে এই সময়টুকু না হলে আমরা প্রিম্যাচিউর ইজাকুলেশন বলব, এই সময়টুকু হলে আমরা প্রিম্যাচিউর ইজাকুলেশন বলব না।
ডা. মেহরান হোসেন বলেন, কিছু ফ্যাক্টর তবু থাকে। এক থেকে দেড় মিনিটের আগে যদি তার ইজাকুলেশন হয়ে যায়, একে আমরা সাধারণত প্রিম্যাচিউর ইজাকুলেশন বলি। প্রিম্যাচিউর ইজাকুলেশনের অনেক কারণ আছে। প্রথম কারণ হচ্ছে ইডিওপ্যাথিক, মানে কোনও কারণ পাওয়া যাচ্ছে না। দুই নম্বর হচ্ছে সাইকোলজিক্যাল। সাইকোলজিক্যালের মধ্যে অনেক কিছু চলে আসে। যেমন মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা, উদ্বেগ, ঘুমের অভাব, যৌনশিক্ষার অভাব, ছোটকালে যদি সেক্সুয়াল ট্রমা থাকে বা ভয় থাকে, ঘুমের অসুবিধা, পারিবারিক কলহ—এ রকম অনেক ব্যাপার চলে আসে। এরপর আসে বিভিন্ন ওষুধ। অনেক ওষুধের সাইড ইফেক্টের কারণে প্রিম্যাচিউর ইজাকুলেশন হয়ে থাকে। আবার কিছু রোগ আছে। যেমন ডায়াবেটিস হলে, থাইরয়েডের সমস্যা থাকলে, টেস্টোস্টেরন হরমোনের ইমব্যালান্স হলে; আরও অনেক কারণ আছে। মানুষের অভ্যাসের মধ্যে যেটা আছে—স্মোকিং ও অ্যালকোহল। এ দুটো অভ্যাস যাদের থাকে, তাদের প্রিম্যাচিউর ইজাকুলেশন হয়।
প্রিম্যাচিউর ইজাকুলেশনের চিকিৎসা পদ্ধতি বাংলাদেশে কি রয়েছে? আমরা যদি দেখি, অনেকে চিকিৎসকের কাছে যেতে লজ্জা বোধ করেন। অনেককে বৈবাহিক জীবনে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এ ক্ষেত্রে কী কী করণীয় ও চিকিৎসা পদ্ধতি কী কী রয়েছে? সঞ্চালকের এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. মেহরান হোসেন বলেন, এখানে আপনাকে কয়েকটা স্টেপে চিন্তা করতে হবে। একটা হচ্ছে কজটা ইভ্যালুয়েট করতে হবে। কারণটা। ডায়াবেটিসের কারণে হচ্ছে কি না, হরমোনের কারণে হচ্ছে কি না, থাইরয়েডের কারণে হচ্ছে কি না, না কি স্মোকিং-অ্যালকোহল থেকে হচ্ছে; তো কারণটা যদি আমরা আইডেন্টিফাই করতে পারি, তাহলে সে ক্ষেত্রে কারণটাকে বন্ধ করতে হবে বা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। তাহলে সে ক্ষেত্রে ইমপ্রুভমেন্ট পাব।
ডা. মেহরান হোসেন বলেন, দ্বিতীয়ত আসে কোনও কারণ পাচ্ছি না, শুধু সাইকোলজিক্যাল। তাহলে সে ক্ষেত্রে তাঁকে স্টেপ বাই স্টেপ ট্রিটমেন্ট করতে হবে। প্রথমে রি-অ্যাসুরেন্স এবং কাউন্সেলিং খুবই ইমপরট্যান্ট। প্রয়োজনে কাপল কাউন্সেলিং বা স্বামী-স্ত্রীকে একসঙ্গে কাউন্সেলিং করানো যেতে পারে। এ ছাড়া কিছু এক্সারসাইজ আছে। ওষুধেরও ভূমিকা আছে।
এনটিভি