চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে সাত বছরের এক শিশুকে জবাই করে হত্যার অভিযোগে দুই মাদরাসা শিক্ষার্থীকে আটক করেছে পিবিআই। ঘটনার চার মাসের মাথায় ১৫ বছর বয়সী ওই দুই শিক্ষার্থী হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকারের পাশাপাশি উদ্ধার করা হয়েছে ছুরি এবং অন্যান্য আলামত। অথচ হত্যাকাণ্ডের পরপরই পুলিশ তিন মাদরাসাশিক্ষককে গ্রেফতার করেছিল।
রোববার (১৯ জুন) সকালে পিবিআই কর্মকর্তারা দুই শিক্ষার্থীকে নিয়ে সরাসরি চলে আসেন বোয়ালখালী চরনদ্বীপ দরবার শরিফ মাদরাসার হেফজখানায়। পরবর্তী সময়ে দুজনকে নিয়ে চলে তল্লাশি। শিক্ষার্থীর ট্রাংক থেকে উদ্ধার হয় ছুরি। অন্যান্য আলামতও ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল ঘটনাস্থলে। সেগুলোও জব্দ করে পিবিআই।
৫ মার্চ সকালে হেফজখানার কক্ষ থেকে সাত বছর বয়সী শিক্ষার্থী ইফতেখার মালেকুল মাসফির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে তাৎক্ষণিকভাবে আটক করা হয় তিন শিক্ষককে। প্রথম পর্যায়ে থানা পুলিশ হত্যার রহস্য উন্মোচনে ব্যর্থ হওয়ায় তদন্তভার পায় পিবিআই। মাদরাসার অন্তত ৫০ শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসাবাদের পর আটক করা হয় সন্দেহভাজন দুই শিক্ষার্থীকে। এর মধ্যে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ১০ বছর বয়সী আরও দুই শিক্ষার্থী পিবিআইয়ের কাছে জবানবন্দিও দিয়েছে।
পিবিআইয়ের দাবি, তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের পাশাপাশি ঘটনার পারিপার্শ্বিকতায় দুই শিক্ষার্থীকেই সন্দেহ করা হয়। শেষ পর্যন্ত তারাই হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরিসহ অন্যান্য আলামত বের করে দিয়েছে। পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান বলেন, খাবার পরিবেশনা, খাবার গ্রহণসহ অন্যান্য বিরোধ ছিল। আটক শিক্ষার্থীরা ওই শিশুকে হত্যা করেছে।
নিহত মাসফির পরিবারের দাবি, প্রথম পর্যায়ে তারা মাদরাসার শিক্ষকদের সন্দেহ করলেও পরবর্তী সময়ে এই দুই শিক্ষার্থীর সন্দেহভাজন আচরণ নিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছিল। তবে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চায় আটক দুই শিক্ষার্থীর পরিবার।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে, এমনিতে তাদের মধ্যে সিনিয়র-জুনিয়র বিরোধ ছিল। ঘটনার দিন মাসফিকে বলৎকার করা হয়। আর মাদরাসা কর্তৃপক্ষকে অভিযোগ দেয়ার ভয়েই তাকে জবাই করে হত্যা করা হয়েছিল।