পদ্মা সেতু নির্মাণকে বাংলাদেশের আর্থিক সক্ষমতার প্রতীক বলে মনে করে চীন। ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত লি জী মিং বললেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিক প্রচেষ্টা ও রাজনৈতিক সদিচ্ছার কারণেই এই সেতু নির্মাণ সম্ভব হয়েছে। আর বিশ্বব্যাংক বিনিয়োগ থেকে সরে গিয়েছিল বিশ্বাস না থাকায়।
দেশের ১৬ কোটি মানুষের আগ্রহ-উচ্ছাস যেমন স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন ঘিরে, তেমনি বন্ধু রাষ্ট্র ও উন্নয়ন সহযোগীদেরও দৃষ্টি সেখানে। দুর্নীতির আজগবি অভিযোগে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়ন বাতিল এবং তা দেখে অনেকে সরে গেলেও ভড়কে যায়নি বাংলাদেশ। শেখ হাসিনা সরকারের সাহসী সিদ্ধান্তে এখন দৃশ্যমান স্বপ্নের পদ্মা সেতু। উদ্বোধন হচ্ছে ২৫ জুন।
নিজস্ব অর্থায়নে সেতু নির্মাণের চ্যালেঞ্জ নিয়েছিল সরকার, টেন্ডার দাখিল করে উন্নয়ন সহযোগী দেশ চীনের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। যাদের হাতে শেষ হয় বিশাল কর্মযজ্ঞ। এসব নিয়ে কয়েকটি গণমাধ্যমের সাথে খোলামেলা কথা বলেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত। জানান, পদ্মা সেতু নির্মাণ সম্ভব হয়েছে শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সদিচ্ছার কারণে।
লি জিমিং বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণের গৌরব শুধু বাংলাদেশের। সাধুবাদ জানাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। বাংলাদেশিদের মতোই আমরা আনন্দিত। কারণ এর নির্মাণে আমরাও অংশিদার। প্রেসিডেন্ট শি চিন পিং যখন বার বার দুই দেশের সর্ম্পকের কথা বলেন, তখনই পদ্মা সেতুর কথা ওঠে।
চীন মনে করে, পদ্মা সেতুর কারণে এ দেশের ৫০ শতাংশ মানুষ সরাসরি লাভবান হবে। পাশাপাশি বিশ্বের সাথে এই অঞ্চলের আঞ্চলিক যোগাযোগে আসবে যুগান্তকারী পরিবর্তন।
পদ্মা নদীর তলদেশের বিরল চরিত্রের কারণে সেতু নির্মাণ করা অনেক চ্যালেঞ্জ ছিল উল্লেখ করে লি জিমিং বলেন, এবারই প্রথম নতুন অন্তত ৩০টি টেকনোলজি ব্যবহার করা হয় পদ্মা সেতুতে। চারদেশের ৫টি প্রতিষ্ঠান পদ্মা সেতুর টেন্ডারে অংশগ্রহণ করেছিল, কিন্তু চীন ছাড়া অন্য দেশের কোনো কোম্পানি এগিয়ে আসেনি। তাদের ধারণা ছিল, বাংলাদেশ এই অর্থ পরিশোধ করতে পারবে না।
বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন থেকে সরে যাওয়া কোনো ষড়যন্ত্রের অংশ কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নেরও জবাব দেন রাষ্ট্রদূত। বলেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে পদ্মা সেতুর অর্থায়ন নিয়ে গুজব ছড়ানো হয়েছে। আমি ষড়যন্ত্রের কথা বলবো না, শুধু বলবো অর্থায়নে অনেকের বিশ্বাস ছিল না। তাদের ধারণা ছিল, বাংলাদেশ এই অর্থ পরিশোধ করতে পারবে না। আমার সন্দেহ আছে, শেখ হাসিনা যেভাবে পেরেছে, অন্য দেশের কোনো নেতা এভাবে সাহস করতে পারতেন কিনা। কেউ কেউ বাংলাদেশের এই সক্ষমতা দেখে খুশি না।
রাষ্টদূত জানান, চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিন পিং বাংলাদেশ ইস্যুতে আলাপকালে সবসময় গুরুত্ব দেন দু’দেশের সম্পর্ক উন্নয়নের ওপর। পদ্মা সেতুর অগ্রগতি নিয়ে নিয়মিত খোঁজখবর নেন তিনি।