বৈশ্বিক তেলসংকট নিয়ে আলোচনা করতে সৌদি আরব সফরের পরিকল্পনা করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এ ছাড়া সংকট কাটাতে তিনি প্রধান কয়েকটি তেল কোম্পানির কাছে চিঠিও পাঠিয়েছেন। এসব খবর প্রকাশের পর জ্বালানিনীতির বিষয়ে বাইডেনকে ‘দেউলিয়া’ ও ‘দুর্বল’ বলে সমালোচনা করা হয়েছে। খবর স্কাই নিউজ।
গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে গ্যাসের দাম প্রতি গ্যালন ৫ ডলারের বেশি হওয়ায় তেলপ্রধান দেশগুলোকে উত্তোলন বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছিলেন বাইডেন। মঙ্গলবার (১৪ জুন) সাতটি তেল কোম্পানিকে চিঠি পাঠিয়েছিলেন তিনি। কোম্পানিগুলো হলো: ম্যারাথন পেট্রোলিয়াম, ভ্যালেরো এনার্জি, এক্সনমোবিল, ফিলিপস ৬৬, শেভরন, বিপি ও শেল।
বাইডেন বলেছেন, যুদ্ধের সময় তেল কোম্পানির রেকর্ড মুনাফা অর্জন অগ্রহণযোগ্য।
প্রসঙ্গত, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আগামী জুলাইয়ে গালফ কো-অপারেশন কাউন্সিলের (জিসিসি) সম্মেলনে অংশ নিতে সৌদি আরব সফর করবেন। হোয়াইট হাউস চলতি সপ্তাহে বাইডেনের এ সফরের পরিকল্পনার কথা জানায়।
তেলের বাজার মসৃণ করতে ও করোনা-পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে বাইডেনের সৌদি সফর অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। এ সফরে সৌদি আরবকে তেলের উত্তোলন বাড়াতে রাজি করানোর চেষ্টা করবেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের মধ্যে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক সত্তর বছরেরও বেশি। সম্পর্কের মূলে রয়েছে জ্বালানি তেল। সৌদি আরব বিশ্বে তেল উৎপাদনে শীর্ষে রয়েছে। ওপেক দেশগুলোর মধ্যে শুধু সৌদি আরবই বিপুল পরিমাণ তেল উৎপাদনের ক্ষমতা রাখে।
কিন্তু দেড় বছর আগে প্রেসিডেন্ট বাইডেন ক্ষমতায় এসে সৌদি-যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের অবনতি ঘটে। সৌদি বংশোদ্ভূত ওয়াশিংটন পোস্টের সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যার জন্য সৌদি যুবরাজকে দায়ী করেছিলেন বাইডেন। যুবরাজের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগও করে যুক্তরাষ্ট্র। এ ছাড়া ইয়েমেন যুদ্ধে সৌদি আরবের অংশগ্রহণ, মার্কিন প্রতিদ্বন্দ্বী রাশিয়া ও চীনের প্রতি সৌদি দৃষ্টিভঙ্গি সহ্য হয়নি যুক্তরাষ্ট্রের।
যুক্তরাষ্ট্র যখন সৌদি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল, তখন বিশ্ববাজারে তেল পর্যাপ্ত ছিল। জ্বালানি তেলের এত দামও ছিল না, বরং নিম্নমুখী ছিল। কিন্তু ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান ও এর জেরে পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞা বিশ্ববাজারে তেলের সংকট বাড়িয়েছে। এ পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র তার অবস্থান বদলিয়েছে। ফলশ্রুতিতে সমালোচনার মুখে পড়েছেন বাইডেন।