ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী জারিন তাসনিম দিয়া নিজের হাতে লেখা কোরআনের অনুলিপি উপহার দিতে চান দেশের পাঁচ শ মসজিদে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৪-১৫ সেশনের শিক্ষার্থী। করোনা মহামারির কারণে যখন দীর্ঘ সময় পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ছিল, তখন তাসনিম দিয়া হাতে লিখে কোরআনের অনুলিপি তৈরি করেন।
জারিন তাসনিম দিয়া জানান, ২০২০ সালের মার্চে ঘরবন্দি হওয়ার পর অবসর সময়ে মহৎ কিছু করার চিন্তা থেকেই এই কাজ শুরু করেন তিনি।
প্রথমে শেষ করতে পারবেন এমনটিও ভাবেননি তিনি। কিন্তু পাঁচ পারা পর্যন্ত লেখা হয়ে গেলে সাহস ও অনুপ্রেরণা খুঁজে পান। বিস্ময়কর ব্যাপার হলো, তাসনিম দিয়া হাফেজ নন এবং তিনি মাদরাসায়ও পড়ালেখা করেননি। এ জন্য তাঁকে অনুসরণ করতে হয়েছে বাড়তি সতর্কতা। আয়াতে আয়াতে আঙুল রেখে লিখতে হয়েছে। আর তাতে সময় লেগেছে দেড় বছর। দীর্ঘ এই সময়ে পাশে থেকে তাসনিম দিয়াকে অনুপ্রেরণা দিয়েছেন তাঁর মা ও বাবা। তিনি মনে করেন, মা-বাবার অনুপ্রেরণা না থাকলে তাঁর পক্ষে এই কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হতো না।
লেখা শেষ হওয়ার পর এই গুণী শিক্ষার্থী ৬৫১ পৃষ্ঠার অনুলিপিটি ডিজাইন করেন এবং ৩০ জন হাফেজকে তা সংশোধনের জন্য দেন। কোরআনের হাফেজরা দেড় মাস দেখে সংশোধন করে দেন এবং তাঁদের মতামতের ভিত্তিতে প্রিন্ট করেন জারিন তাসনিম দিয়া। প্রথমে এক কপি প্রিন্ট করেন এবং পরে আরো কয়েক কপি। তাঁর ইচ্ছা অন্তত পাঁচ শ কপি করে বিভিন্ন মসজিদ-মাদরাসায় বিতরণ করবেন। তিনি তাদেরকেই কোরআনের অনুলিপি তুলে দিতে চান যারা নিয়মিত কোরআন তিলাওয়াত করে। এত পরিশ্রমের বিনিময়ে তাসনিম দিয়া শুধু আল্লাহর কাছে সওয়াব বা প্রতিদান প্রত্যাশা করেন। আর হৃদয়ের আত্মতৃপ্তি তাঁর বাড়তি পাওনা।