পূর্ব আফ্রিকার দেশ উগান্ডার বাসিন্দা মরিয়ম নাবাতানজি। বয়স ৪৩ বছর। এ বয়সেই ৪৪ সন্তানের মা তিনি। এর মধ্যে একবার মাত্র একটি সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। আর বেশির ভাগ সময়ই দু-তিনটি করে বাচ্চার জন্ম দিয়েছেন তিনি। খবর ন্যাশনাল পোস্টের।!
এতগুলো সন্তান জন্ম দেয়ার বিষয়টিকে স্বাভাবিক হিসেবে দেখছেন না চিকিৎসকরা। তারা বলছেন, বিরল একটি স্বাস্থ্যগত সমস্যায় ভুগছেন মরিয়ম। আর এ কারণেই কোনো ‘পরিবার পরিকল্পনাই’ তার কাজে আসেনি।
মরিয়মের বয়স যখন ৩ বছর, তখন তার মা তাকে ফেলে চলে যান। তারপর থেকে দাদির কাছেই মানুষ। ১২ বছর বয়সে বিয়ে হয় মরিয়মের। বছর না ঘুরতেই যমজ সন্তানের জন্ম দেন তিনি।
প্রথমবার যমজ সন্তান হওয়ায় মরিয়মসহ পুরো পরিবার অত্যন্ত খুশি হয়েছিল। কিন্তু তারপর টানা চারবার যমজ সন্তানের জন্ম দেন মরিয়ম।
মরিয়ম বুঝতে পারেন, কোথাও একটা সমস্যা হচ্ছে। তার ওপর অভাবের সংসার। সদস্য সংখ্যা ক্রমেই বাড়তে থাকায় অভাব-অনটন যেন আরও গ্রাস করে বসে। সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে মরিয়ম ছুটে যান চিকিৎসকের কাছে।
পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চিকিৎসক তাকে জানান, তার ডিম্বাশয়ের আকার স্বাভাবিকের তুলনায় বড়। এমনকি তার প্রজনন ক্ষমতাও স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি। পুরো বিষয়টি নিয়ে স্বামীর সঙ্গে আলোচনা করেন মরিয়ম। তখন মরিয়মের কথায় গুরুত্ব দেননি তার স্বামী।
এরপর চারবার একসঙ্গে তিন সন্তান ও পাঁচবার একসঙ্গে চার সন্তানের জন্ম দেন মরিয়ম। সব মিলিয়ে ৪৩ বছরের মরিয়ম ৪৪ জন সন্তানের মা হন। তবে এর মধ্যে পাঁচ সন্তান মারা যায়। বর্তমানে ৩৮ ছেলেমেয়ে নিয়ে মরিয়মের সংসার। স্বামী তাকে ছেড়ে গেছে।
উগান্ডায় পরিবারের আকার সাধারণত অনেক বড় হয়। নারীর সন্তান জন্মদানের হার ৫.৬, যা আফ্রিকা মহাদেশে সর্বোচ্চ এবং বৈশ্বিক গড়ের চেয়ে ২.৪ বেশি। মরিয়মের পরিবার তারও কয়েক গুণ বড়।
সংসারে দারিদ্র্যের ছাপ স্পষ্ট। রোজ দুবেলা দুমুঠো খাবারও জোটে না। তবে মরিয়াম জানান, অভাব থাকলেও আনন্দের কোনো অভাব নেই। ৩৮ সন্তানকে নিয়ে আনন্দেই দিন কাটে তার।