নিরাপদ ও সহজ লেনদেন নিশ্চিত করতে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) এর আওতাধীন ৬টি পশুর হাটে (গাবতলী,বসিলা, আফতাবনগর, ভাটারা, কাওলা ও উত্তরা ১৭ নম্বর সেক্টরস্থ) পবিত্র ঈদ-উল-আযহার পশুর হাট চলাকালীন ডিজিটাল পেমেন্ট বুথ স্থাপনের বিষয়ে পাইলট প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়েছে।
“মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। পদ্মা সেতু হয়ে গেছে, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ দ্রুতই সমাপ্ত হচ্ছে, কিছুদিন পর পাতাল রেলও হয়ে যাবে। অথচ এই দেশে হাটে গেলে পথে কোন খামারির টাকা ছিনতাই হবে সেটা মেনে নেয়া যায় না। নিরপাদ লেনদেন নিশ্চিত করতে আমরা স্মার্ট হাটের উদ্যোগ নিয়েছি।”
আজ বুধবার দুপুরে বনানীর হোটেল শেরাটনে অনুষ্ঠিত স্মার্ট বাংলাদেশ স্মার্ট হাট-শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএনসিসির মেয়র সভাপতির বক্তব্যে এসব তথ্য জানান।
মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, “ডিএনসিসি ইতোমধ্যে ডিজিটাল মাধ্যমে নানা কার্যক্রম পরিচালনা করছে।পর্যাক্রমে ডিজিটাল কার্যক্রম আরও বাড়বে। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকায় অধিকাংশ রিকশা অবৈধভাবে চলছে। আমরা আগামী ছয় মাসের মধ্যে রিকশাগুলোতে ডিজিটাল নম্বর প্লেট দেব, কিউআর কোডসহ। কিউআর কোড থাকায় সব তথ্য থাকবে, এভাবে আমরা নিরাপদ চলাচলের ব্যবস্থা করতে পারবো। প্রথম অবস্থায় ঢাকা শহরে দুই লাখ রিকশায় ডিজিটাল নম্বর প্লেট দেওয়া হবে। এই নম্বর প্লেট আসবে বাইরে থেকে, তাই নকল করার কারও কোনো সামর্থ্য নেই। ধরলেই আমরা বুঝতে পারবো নম্বর প্লেট নকল করা হয়েছে কি না।”
তিনি জানান, “আগামী মাসে উত্তর সিটি এলাকায় ডিজিটাল কার পার্কিং শুরু হবে। স্মার্ট সিটি-স্মার্ট বাংলাদেশ-স্মার্ট ডিএনসিসি উপহার দিতে চাই। স্মার্ট ঢাকা গড়ে তোলার লক্ষ্যে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি।”
নগরবাসীকে সতর্ক করে আতিকুল ইসলাম বলেন, “এই ডেঙ্গুর সময় বাড়িতে বাড়িতে ছাদ বাগান চেক করা চ্যালেঞ্জ; কেউ অব্যবহৃত টায়ার রেখে দিল না কি, ছাদ বাগান যারা করেছে তারা ঠিকমতো মেইনটেইন করছে কিনা।
তিনি আরও বলেন, “গত ১০ দিন যাবৎ ড্রোনের মাধ্যমে প্রত্যেকটি ছাদ বাগান আমরা চেক শুরু করেছি। এটা আমাদের জন্য খুব ইজি হয়ে গেছে। যেখানে আমরা লার্ভা পাচ্ছি ওই বাড়িতে গিয়ে জরিমানা করছি। আমরা বলতে চাই, যার যার বাড়ির দায়িত্ব তার নিতে হবে। আমরা ওষুধ ছিটিয়ে দিচ্ছি। কিন্তু আপনার বাসায় আপনি যদি এডিস মশার জন্ম দেন এর দায়-দায়িত্ব আপনাকে নিতে হবে এবং জেল-জরিমানা ও নিয়মিত মামলা হবে।”
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী বলেন, “আমি অত্যন্ত আশাবাদী আমাদের এই বাংলাদেশ একটি উন্নত দেশে পরিণত হবে। সেই পথে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। আমাদের দেশের মন্ত্রী-এমপি, সরকারি কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, কৃষক, সাধারণ মানুষসহ সকল শ্রেণি পেশার সবাই মিলে আমরা দেশের জন্য কাজ করছি বলেই দেশটা এগিয়ে যাচ্ছে। আসলে আমাদের প্রত্যেকেরই নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালন করতে হবে এবং জবাবদিহি করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “আমি বিশ্বাস করি উত্তর সিটি কর্পোরেশনের পশুর হাট নয় শুধু পর্যায়ক্রমে দেশের সকল জায়গায় ডিজটাল লেনদেনের ব্যবস্থা হবে।”
উল্লেখ্য, হাটসমূহে পেমেন্ট পার্টনার হিসেবে রয়েছে কার্ড স্কিম পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ- মাস্টারকার্ড, ভিসা ও আমেরিকান এক্সপ্রেস। ডিজিটাল পেমেন্ট বুথ স্থাপন ও পরিচালনার জন্য লিড ব্যাংক হিসেবে ৬টি বাণিজ্যিক ব্যাংক (ব্যাংক এশিয়া লিমিটেড, ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড, ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড, দি সিটি ব্যাংক লিমিটেড); এবং মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস প্রদানকারী সংস্থা হিসেবে বিকাশ লিমিটেড ও ইসলামী ব্যাংক এম ক্যাশ একযোগে কাজ করছে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক খুরশীদ আলম, অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ লিমিটেডের (এবিবি) চেয়ারম্যান সেলিম আর এফ হোসেন, বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস এসোসিয়েশন প্রতিষ্ঠাতা সাদিক এগ্রোর প্রেসিডেন্ট ইমরান হোসেন, পিএসডির অতিরিক্ত পরিচালক শাহ জিয়া-উল হক, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিরেক্টর জেনারেল ডা. মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদা এবং প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ও ডিএনসিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।