টি-টুয়েন্টি সিরিজে প্রথম দুটি ম্যাচের ভেন্যু ডমিনিকায় সমুদ্রপথে যাওয়ার সময় ভয়ঙ্কর এক অভিজ্ঞতা হয়েছে বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটারদের। সবাই নিরাপদে পৌঁছালেও দেড় ঘণ্টার ফেরি জার্নি মোটেও সুখকর ছিল না। বৈরি আবহাওয়ার কারণে সমুদ্রের ঢেউ বেড়ে যায়। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন অনেক ক্রিকেটার।
তাদের মধ্যে একজন নুরুল হাসান সোহান। অসুস্থ পয়ে পড়েছিল এই কিপার-ব্যাটার। চ্যানেল আই অনলাইনকে হোয়াটসঅ্যাপে জানান এখন স্বাভাবিক আছেন তিনি।
সেন্ট লুসিয়া থেকে ডমিনিকায় পৌঁছে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে মেহেদী হাসান মিরাজ লিখেন, ‘আমরা যখন সমুদ্র পারি দিচ্ছিলাম তখন অনেক আনন্দ করছিলাম আবার অনেকে ভয়ও পাচ্ছিলাম। আজকের দিনটা অনেক স্মরণীয় হয়ে থাকবে!’
বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের কারোই এমন সমুদ্র পাড়ি দেওয়ার অভিজ্ঞতা আগে ছিল না। ওয়েস্ট ইন্ডিজে গেলে অন্য বিদেশি দলগুলোও এভাবে সমুদ্রপথে এক দ্বীপ থেকে আরেক দ্বীপে যায় না। এমনকি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলও এই প্রথম ফেরিতে এক দ্বীপ থেকে আরেক দ্বীপে গেল।
ক্রিকেটারদের বহনকারী ফেরিতে থাকা প্রথম আলো প্রতিনিধি তারেক মাহমুদ তার প্রতিবেদনে পরিস্থিতির বর্ণনা দেন এভাবে: শুরুতে ফেরি যখন স্টার্ট দিল, সবাই খুব হৈ–চৈ করে যাত্রা শুরু করল। পেছনের ডেকে জড়ো হয়ে চলছিল সেলফি তোলা আর নীল সমুদ্রের ভিডিও মুঠোফোনে ধারণ করা। ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের ক্রিকেটার, ধারাভাষ্যকার, সাংবাদিক এবং সাধারণ কিছু যাত্রী—সব মিলিয়ে শুরুতে মনে হচ্ছিল বুঝি নৌ–বিহারেই যাচ্ছে কেউ। কিন্তু ঢেউয়ের ধাক্কায় ফেরির বড় বড় দুলুনিতে এরপরই একে একে ‘মোশন সিকনেসে’ আক্রান্ত হতে শুরু করেন ক্রিকেটারেরা। সেন্ট লুসিয়া থেকে মার্টিনেক— এই দেড় ঘন্টার যাত্রাতেই সবাই কাবু। সবচেয়ে বেশি খারাপ অবস্থা হয়েছে পেসার শরীফুল ইসলাম, উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান নুরুল হাসান এবং ম্যানেজার নাফিস ইকবালের। তাদের অবস্থা দেখে অন্যরাও আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
মার্টিনেকে ৪০ মিনিটের বিরতিতে নাফিস ও নুরুল কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে উঠলেও শরীফুল মার্টিনেক থেকে ডমিনিকা আসার পথে আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন। পলিথিনে মুখ ঢুকিয়ে একাধিকবার বমি করতে দেখা গেছে তাকে। অস্থিরতা কমাতে এক পর্যায়ে তো গায়ের টি–শার্টটাই খুলে ফেলেন তিনি।
এর আগে যাত্রার শুরুতেই বমি করতে করতে অসুস্থ হয়ে পড়েন দলের সঙ্গে থাকা ম্যাসিওর সোহেল। ক্লান্ত হয়ে সেই যে ফেরির ডেকে শুয়ে ঘুমিয়ে পড়েন তিনি, উঠেছেন ফেরি ডমিনিকা পৌঁছানোর পর। এ ছাড়া ‘মোশন সিকনেসে’ ভুগেছেন দলের আরো অনেকেই। সঙ্গে ভয়, আতঙ্ক তো ছিলই।