ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢল আর মুষলধারায় বৃষ্টি দেশের সিলেট-সুনামগঞ্জসহ বেশ কয়েকটি জেলায় বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। এ কারণে চলতি বছরের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমান পরীক্ষা রোববার (১৯ জুন) অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও, তা পিছিয়ে যায়। নতুন রুটিনে কবে থেকে পরীক্ষা শুরু হবে, তা নিয়েও দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। তবে বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ঈদের ছুটি শেষে নতুন রুটিনে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। সেইসঙ্গে মাধ্যমিক স্তরের এ পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরবর্তী দুই মাসের মধ্যেই এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরুর চিন্তা-ভাবনা চলছে বলেও জানা যায়।
এ বিষয়ে আন্তঃশিক্ষাবোর্ড সমন্বয় কমিটির একাধিক সদস্য সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হলেও চলমান বন্যা পরিস্থিতির কারণে পরীক্ষা স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এসএসসি-সমমান পরীক্ষার জন্য নতুন রুটিন দেয়া হবে। আগের রুটিনের আলোকে নতুন পরীক্ষার রুটিন তৈরি করা হবে, এক্ষেত্রে শুধু পরীক্ষা শুরুর সময়টা পরিবর্তন হবে। পরীক্ষার্থীদের নতুনভাবে প্রস্তুতির জন্য ৭ থেকে ১৫ দিন সময় দেয়া হতে পারে।
বোর্ড সূত্র আরও জানিয়েছে, সাধারণত এসএসসি পরীক্ষা শেষ হওয়ার মাস দুই পর এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হয়। মাঝের সময়টাতে চলে প্রস্তুতি। এবার এইচএসসি পরীক্ষা পিছিয়ে জুনের পরিবর্তে জুলাইয়ের শেষ দিকে শুরু হতে পরে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আন্তঃশিক্ষাবোর্ড সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক ও ঢাকা শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার সংবাদমাধ্যমকে জানান, বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলে আমরা ঈদের আগে কয়েকটি পরীক্ষা নেয়ার চিন্তা করছি। বর্তমানে বিভিন্ন অঞ্চলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো পানিবন্দি হয়ে পড়ায় তা সম্ভব হবে কি না, তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। আমাদের প্রস্তুতি থাকলেও বন্যা পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করছে, কবে থেকে শুরু হবে পরীক্ষা।
বিলম্বিত পরীক্ষায় বিষয় কমানো হবে কি না এ বিষয়ে তিনি বলেন, বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে দেরি হলেও পরীক্ষা সংক্ষিপ্ত করা বা বিষয় কমানোর কোনো সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। আগে রুটিন শিডিউল অনুযায়ীই নতুন রুটিন দেয়া হবে। তবে পরীক্ষা শুরুর সময়টা পরিবর্তন করা হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, একটি পরীক্ষার সঙ্গে আরেকটি সম্পৃক্ত। এ কারণে এসএসসি পরীক্ষা পিছিয়ে যাওয়ায় এইচএসসিও পিছিয়ে যাবে। সে কারণে আগামী বছরের এ দুই পরীক্ষা ফেব্রুয়ারি ও এপ্রিলে আয়োজন করা সম্ভব হবে না। সেগুলো শুরু করতে বিলম্ব হবে।
১৯ জুন সারা দেশে একযোগে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরুর প্রস্তুতি ছিল। কিন্তু দেশে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় গত ১৭ জুন সব শিক্ষাবোর্ডের এসএসসি জেনারেল, এসএসসি ভোকেশনাল এবং দাখিল পরীক্ষা স্থগিত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
জানা গেছে, চলতি বছর এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় ২০ লাখ ২১ হাজার ৮৬৮ জন শিক্ষার্থী অংশ নেবে। সাধারণ ৯টি বোর্ডের অধীনে ১৫ লাখ ৯৯ হাজার ৭১১ জন পরীক্ষার্থী রয়েছে। এর বাইরে দাখিলে ২ লাখ ৬৮ হাজার ৪৯৫ জন আর কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এসএসসি ও দাখিল ভোকেশনালে ১ লাখ ৬৩ হাজার ৬৬২ পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে।