কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে নওগাঁর বদলগাছীর পশুর হাটে এবারের সেরা আকর্ষণ ‘পদ্মা’ ও ‘সেতু’। নাম শুনেই বোঝা যাচ্ছে, কেমন হবে গরু দুটি। ইতোমধ্যেই সাড়া ফেলেছে উত্তরবঙ্গের বিশাল আকৃতির গরু পদ্মা ও সেতু। গরু দুটি ফিজিয়ান ও সিন্ধি জাতের ষাঁড়। হালকা সাদা-কালো রঙের মিশেলে পদ্মা এবং লাল ও হালকা কালো রঙের মিশ্রণে ‘সেতু’ যেন আস্ত দুটি হাতি। ষাঁড় দুটির ওজন প্রায় ৬৩ মণ। কালচে রঙের পদ্মার ওজন ৩৩ মণ ও লালচে রঙের সেতুর ওজন ৩০ মণ। মালিক লিটন ষাঁড় দুটির দাম হেঁকেছেন ২৫ লাখ।
পরিবারের ছোট্ট শিশুরা গরু দুটিকে ভুতু ও ঝিঁঝিঁ বলেই ডাকে। সম্প্রতি পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর এলাকাবাসী শখ করে গরু দুটির নাম রেখেছেন ‘পদ্মা’ ও ‘সেতু’। ইতোমধ্যেই ঈদকে ঘিরে অনলাইনের মাধ্যমে গরু দুটি বিক্রয়ের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।
গরু দুটিকে মোটাতাজাকরণের ওষুধ বা ইনজেকশন এমন কোনো কিছুই প্রয়োগ করা হয়নি। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক খাবারের মাধ্যমে মোটাতাজা করা হয়েছে। মানসম্মত খাদ্য ও বিজ্ঞানসম্মত পরিচর্যা করা হয়েছে। প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ পদ্মা ও সেতুকে দেখতে লিটনের বাড়িতে ভিড় করছেন। কেউ কেউ আবার ‘পদ্মা’ ও ‘সেতু’র সঙ্গে সেলফি তুলে সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছেন।
উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের দরিয়াপুর গ্রামের মামুনুর রশিদ লিটন। লিটন শখ করে ২ বছর ৪ মাস আগে জয়পুরহাটের পাঁচবিবিরহাট থেকে ১ লাখ ১২ হাজার টাকায় কেনেন বিদেশি জাতের দুটি এঁড়ে গরু। কেনার সময় ৬ মাস বয়সী গরু দুটির দাম ছিল ৫৬ হাজার টাকা করে।
গরু দুটির প্রতিদিনের খাদ্য কাঁচা ঘাস, বিচিকলা, গম, ধান, ভুট্টা, মাসকালাই, খেসারি, মসুর ডাল ও ভুসি দিয়ে নিজেই ব্ল্যান্ড করে খাওয়াতেন লিটন। প্রতিদিন পদ্মা ও সেতুর জন্য দেড় হাজার টাকা খরচ হয়। কেনার পর থেকে এখন পর্যন্ত ২ বছর ৪ মাসে ‘পদ্মা’ ও ‘সেতু’র পেছনে ক্রয় করাসহ খাবার ও ওষুধ মিলে খরচ হয়েছে প্রায় ৮ থেকে ৯ লাখ টাকা। ৩৩ মণের পদ্মা আর ৩০ মণ ওজনের সেতুকে বাড়ির দরজা দিয়ে আর বের করা যাচ্ছে না। দরজা কেটেই হয়তো বের করতে হবে।
গরুর মালিক মামুনুর রশিদ লিটন আরটিভি নিউজকে বলেন, শখ করে অনেক যত্ন করে লালন-পালন করেছি ‘পদ্মা’ ও ‘সেতু’ নামের দুটি গরুকে। পদ্মার ওজন হবে ১ হাজার ৩০০ কেজি আর সেতুর ওজন হবে ১ হাজার ২০০ কেজি। গরু দুটি লম্বায় ৬ ফিট ৫, উচ্চতায় ৫ ফিট। বুকের বেড় ৯৮ ইঞ্চি। মনমতো দাম পেলে বাড়ি থেকেই বিক্রি করব। আর যদি ভালো দাম না পাই তবে ঢাকায় নিয়ে গিয়ে বিক্রি করব। তবে আমার প্রত্যাশা ২৫ লাখ টাকা, কিন্তু এখন পর্যন্ত দাম উঠেছে ১৮ লাখ।
লিটনের স্ত্রী বলেন, আমার স্বামী অনেক সৌখিন মানুষ। নিজের সন্তানের মতো করে গরু দুটিকে লালন-পালন করেছেন। গরু দুটি আমাদের কাছে খুবই আপন হয়ে গেছে। বিক্রি করলে খুব কষ্ট লাগবে। কিন্তু বিক্রি তো করতেই হবে। সে ক্ষেত্রে যদি ভালো দাম পাই, তাহলে কষ্ট কিছুটা কমবে।