ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে জেতার কোন তাড়না ছাড়া বাংলাদেশের হার তৈরি করেছে আলোচনার নতুন খোরাক। প্রতিপক্ষ ১৯৩ রান করার পর বাংলাদেশ দেখাতে পারেনি লড়াইয়ের ঝাঁজ। ব্যাটিং দেখে মনে হয়েছে বাংলাদেশ খেলছে সম্মানজনক হারের লক্ষ্যে। দ্বিতীয় ওভারে ক্রিজে এসে শেষ পর্যন্ত টিকে সাকিব আল হাসান অপরাজিত ফিফটি করলেও ইনিংসটিকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুল। তার মতে এই ধরণের ইনিংস টি-টোয়েন্টিতে কোন কাজে লাগে না।
ডমিনিকায় প্রথম টি-টোয়েন্টি বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ার পর দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ হারে ৩৫ রানে। ১৯৪ রান তাড়ায় নেমে ২৩ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর পুরো খোলসবন্দি হয়ে যান সাকিবরা। রানরেটের দিকে না তাকিয়ে কেবল টিকে থাকাতেই মন দেন সাকিব। ৪৫ বলে ফিফটির পর কয়েকটি শট মেরে ৫২ বলে করেন ৬৮। শেষ দুই ওভারে তিনি যখন মারতে শুরু করেন ততক্ষণে হিসেবের বাইরে বাংলাদেশ।
ইংল্যান্ডে মাইনর কাউন্টি খেলতে থাকা আশরাফুল সমস্যা দেখছেন এই ধরণের অ্যাপ্রোচে। দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে আলাপে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন সাকিবের ইনিংস, ‘আপনি যদি সাকিব আল হাসানের ইনিংস দেখেন। এই ধরণের ইনিংস টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে কোন কাজে লাগে না। আপনাকে খেলতে হবে রানরেটের কথা মাথায় রেখে। কতগুলো উইকেট পড়ল এসব দেখলে চলবে না। আমার পয়েন্টটা হলো আমাদের কোন পাওয়ার হিটার নেই। হয় শুরুতে একজনকে টোন সেট করে দিতে হবে। না হয় পরে একজনকে মারতে হবে। আমাদের দলে এই ধরণের খেলোয়াড় কোথায়?’
টি-টোয়েন্টিতে ব্যক্তিগত নৈপুণ্যে ম্যাচ ঘুরে যাওয়ার নজির নিয়মিত থাকলেও বাংলাদেশের দর্শন আবার ভিন্ন। অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ প্রায়ই বলেন, তাদেরকে জিততে হবে ‘টিম গেম’ খেলে। অর্থাৎ ম্যাচ জিততে দলের সবাইকে কিছু না কিছু অবদান রাখতে হবে। এই চিন্তা করতে গিয়ে গেম চেঞ্জার ব্যাপারটা থেকে বাংলাদেশ সরে আসছে বলে মত আশরাফুলের, ‘আমাদের দলে কি গেম চেঞ্জার আছে? দুর্ভাগ্যজনকভাবে উত্তরটা নেতিবাচক আসবে। টি-টোয়েন্ট খেলা দুই-তিন ওভারে বদলে যায়। একজন খেলোয়াড় ব্যাটিং বা বোলিং দিয়ে দুই-তিন ওভারে খেলাটা বদলে দেয়। কিন্তু আমাদের দর্শন হচ্ছে গোটা দলীয় পারফরম্যান্সে, আমার মনে হয় সমস্যা সেখানেই।’
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে দ্রুততম (২০ বলে) ফিফটির মালিক আশরাফুল বলেন, পাওয়ার হিটিং করার মতো খেলোয়াড় বাংলাদেশের আছে, প্রক্রিয়া অনুসরণ করে তাদের তৈরি করা হচ্ছে না, ‘আমাদের পাওয়ার হিটার নেই, এই সমস্যার সমাধান করতে পারছি না। আমার মনে হয় আমাদের খেলোয়াড় আছে। কিন্তু আমরা ঠিকঠাক প্রক্রিয়ায় টি-টোয়েন্টি খেলোয়াড় তৈরি করতে পারছি না।’
‘আপনাকে কেউ একজনকে পাওয়ার হিটিংয়ের ভূমিকা দিতে হবে। অন্যথায় এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ করা যাবে না। আমরা ১৫ বছর ধরে টি-টোয়েন্টি খেলছি কিন্তু খুব একটা উন্নতি হয়নি।