ওয়ানডে সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশ করার উচ্ছ্বাসের আবহের মধ্যেই সামনে এলো ক্রিকেটের ২০ ওভারের ফরম্যাটে তামিম ইকবালের বিদায়ের খবর। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণা দিলেন তিনি।
গায়ানায় শনিবার (১৬ জুলাই) ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৪ উইকেটে হারিয়ে ৩-০ ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজ জিতে নেয় বাংলাদেশ। দলের সাফল্যের পাশাপাশি তামিম জিতে নেন ম্যান অব দা সিরিজের পুরস্কার। খেলা শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ পর তিনি সামাজিক মাধ্যমে টি-টোয়েন্টি থেকে বিদায়ের কথা জানান ছোট্ট করে। নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজে তামিম ইকবাল লেখেন- আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে আজকে থেকে আমাকে অবসরপ্রাপ্ত হিসেবে বিবেচনা করুন। ধন্যবাদ সবাইকে।’
তামিমের এই ঘোষণা অবশ্য খুব বড় বিস্ময় হয়ে আসেনি। বরং গত কিছুদিনে এটিকেই অবধারিত বলে মনে হচ্ছিল। ২০২০ সালের মার্চের পর এই সংস্কণে তামিমকে আর দেখা যায়নি তাকে। চোটের কারণে কিছুদিন তাকে পাওয়া যায়নি। পরে ফিট হলেও গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকে সরে দাঁড়ান তিনি নিজের ম্যাচ অনুশীলনের ঘাটতি ও তরুণদের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য।
বিশ্বকাপে দল ব্যর্থ হওয়ার পর তাকে দলে ফেরানোর কথা ওঠে বেশ কয়েকবারই। স্বয়ং বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসানও তার সঙ্গে কথা বলেন কয়েক দফায়। তবে তিনি ফেরেননি। বরং গত ২৭ জানুয়ারি বিপিএল চলার সময় তিনি জানান, আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে ৬ মাসের বিরতি নিচ্ছেন। সেই ৬ মাস শেষ হওয়ার দিন দশেক আগে ৩৩ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান এটিকে রূপ দিলেন স্থায়ী বিদায়ে।
তামিম ইকবালের এই সিদ্ধান্ত তাৎক্ষণিক মনে হলেও ব্যাপারটা কিন্তু আসলে তেমন নয়। ফেসবুকে টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণা সম্বলিত পোস্ট দেওয়ার আগে বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন এবং একাধিক শীর্ষকর্তার সঙ্গে কথা বলে নিয়েছেন তামিম এবং তাদেরকে নিজের ইচ্ছের কথা জানিয়েও দিয়েছিলেন।
বোর্ডের অন্যতম সিনিয়র পরিচালক, ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস আজ রবিবার সকালে গণ্মাধ্যমের সঙ্গে আলাপে জানিয়েছেন, তামিম তো বোর্ড সভাপতি (নাজমুল হাসান পাপন) ও আমাদের সঙ্গে আগেই কথা বলেছে। সেখানেই তার ইচ্ছের কথা জানিয়েছে সে।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৭৮ টি-টোয়েন্টিতে ২৪.০৮ গড়ে ও ১১৬.৯৬ স্ট্রাইক রেটে ১ হাজার ৭৫৮ রান করে তামিম শেষ করলেন তার ক্যারিয়ার। তবে দেশের হয়ে তার ম্যাচ ৭৪টি। চারটি ম্যাচ খেলেছেন তিনি বিশ্ব একাদশের হয়ে। টি-টোয়েন্টিতে একসময় বাংলাদেশের সর্বোচ্চ স্কোরার ছিলেন তিনি। এখনও তিনি আছেন রান স্কোরারের তালিকায় তিনে। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের একমাত্র সেঞ্চুরিয়ানও তিনিই। ২০১৬ বিশ্বকাপে ওমানের বিপক্ষে খেলেছিলেন ১০৩ রানের অপরাজিত ইনিংস। ওই বিশ্বকাপে শুধু বাংলাদেশ নয়, সব দল মিলিয়েই সর্বোচ্চ রান ছিল তার।