দেশের প্রথম মেট্রোরেলের আংশিক চালু হতে আর ৫ মাস বাকি। এমন সময়ে প্রকল্পের ব্যয় ৫০ শতাংশেরও বেশি বাড়তে যাচ্ছে। সেইসঙ্গে সময়সীমাও বাড়ছে দেড় বছর।
আনুষ্ঠানিকভাবে ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট লাইন-৬ বা এমআরটি লাইন-৬ নামে পরিচিত এই প্রকল্পের মেট্রো স্টেশনগুলোর নকশায় পরিবর্তন ও মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত এলিভেটেড রেল লাইনের সম্প্রসারণের কারণে একটি বড় সংশোধনের মধ্য দিয়ে যেতে হবে।
পরিকল্পনা কমিশনে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের পাঠানো সংশোধন প্রস্তাবে বলা হয়েছে, প্রকল্প ব্যয় ৫২ দশমিক ২৫ শতাংশ বা ১১ হাজার ৪৮৭ কোটি টাকা বেড়ে ৩৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকায় দাঁড়াবে। আগে এর ব্যয় ছিল ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা।
সরকারের ৮টি ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্পের মধ্যে একটি এমআরটি লাইন-৬। এই প্রকল্পের কাজ শেষ করার সময়সীমা ২০২৪ সালের জুনের থাকলেও সংশোধনের প্রস্তাবে তা বাড়িয়ে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর করার কথা বলা হয়েছে।
আজ সোমবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এই প্রস্তাব উত্থাপন করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন সিদ্দিক।
প্রস্তাবটি অনুমোদন করা হলে এমআরটি লাইন-৬ হবে সপ্তম ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্প, যেটি অন্তত একবার সংশোধন করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত শুধু রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পটি কোনো সংশোধন করা হয়নি।
অর্থায়ন নিয়ে অনিশ্চয়তা; নকশা, পরিকল্পনা ও জমি অধিগ্রহণ জটিলতা; বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলোর সক্ষমতা ও জবাবদিহিতার অভাব এবং করোনা মহামারির কারণে এই সময় ও ব্যয় বেড়েছে।
জাপানের সহজ শর্তের ঋণে পরিচালিত প্রকল্পটি ২০১২ সালের ডিসেম্বরে অনুমোদিত হলেও ২০১৬ সাল পর্যন্ত এর কাজ শুরু করা হয়নি।
গত জুন পর্যন্ত প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ছিল ৮১ দশমিক ১৯ শতাংশ। অথচ, মেট্রোরেলের উত্তরা-আগারগাঁও অংশ আগামী ১৬ ডিসেম্বর জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার কথা রয়েছে।
নির্মাণকাজ শেষ হলে মেট্রোরেল প্রতি ঘণ্টায় ৬০ হাজার মানুষকে পরিবহন করতে পারবে। বর্তমানে উত্তরা ও মতিঝিলের মধ্যে যাতায়াতে ২ ঘণ্টা সময় লাগলেও মেট্রো রেল চালু হলে তা কমে প্রায় ৪০ মিনিটে নেমে আসবে।
এর ফলে যাতায়াতের সময় ও যানবাহন পরিচালনার খরচের দিক থেকে বছরে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হবে বলে জানিয়েছে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ।