তীব্র তাপপ্রবাহ ও দাবানলে পুড়ছে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ। প্রচণ্ড গরমের কারণে ব্রিটেনে গলে যাচ্ছে বিমানবন্দরের রানওয়ে, ফাটল দেখা দিচ্ছে রেললাইনেও।
জানা গেছে, সোমবার দেশটির বিভিন্ন প্রান্তে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড ছুঁয়ে ফেলেছে। এতে রানওয়ে গলে যাওয়ার পাশাপাশি, মাটির নীচের টিউব রেলে ফাটল দেখা দিয়েছে। ফলে দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।
ব্রিটিশ প্রশাসন জানিয়েছে, বয়স্করা বাড়ির ভিতরে থাকুন। আর যারা নিতান্ত প্রয়োজনে রাস্তায় বের হবেন, সঙ্গে পানির বোতল রাখতে ভুলবেন না।
এর আগে ব্রিটেনে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল ২০১৯ সালের ২৫ জুলাই, কেমব্রিজে। ৩৮.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের সেই রেকর্ড যে এবার ভেঙে যাবে, কয়েক দিন ধরেই এমন আশঙ্কা করছিল দেশটির আবহাওয়া দফতর। তাদের সেই আশঙ্কা সত্য পরিণত করে লন্ডনের তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছুঁয়েছে।
দেশটির আবহাওয়া দফতর আগামী দু’দিনের জন্য লন্ডন ও দক্ষিণ-পূর্ব ইংল্যান্ড থেকে ইয়র্ক ও ম্যাঞ্চেস্টার পর্যন্ত ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি করে জানিয়েছে, রাতেও তাপমাত্রা তেমন কমার সম্ভাবনা নেই। ট্রেন বা মেট্রো ব্যবহার না করে অন্য পরিবহণ সেবা ব্যবহার করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে প্রশাসন।
প্রখর রোদে অনেক সময়েই রেললাইনে ফাটল দেখা দেয়, ঘটতে পারে বড় ধরনের বিপদ। সোমবার লন্ডন থেকে লিডস ও ইয়র্কের প্রায় সব ট্রেনই বাতিল হয়েছে। লন্ডন পরিবহণের প্রধান শাখা শহরের ভূগর্ভস্থ টিউব রেল। লন্ডনবাসীকে সেই মেট্রো এড়িয়ে চলতে বলা হয়েছে। একশ’ বছর বা তার থেকে বেশি প্রাচীন শহরের বেশ কিছু মেট্রো স্টেশনের সবগুলো শীতাতপ নিয়ন্ত্রিতও নয়। ফলে এই প্রখর গরমে যাত্রী ও মেট্রো কর্মীদের অসুস্থ হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এদিকে, ব্রিটেনের লুটন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রখর তাপে রানওয়ের বেশ কিছুটা অংশ গলে যাওয়ায় বিমানবন্দরে ফ্লাইট সেবা বন্ধ করে দিতে হয়েছে। ব্রাইজনর্টনে বিমানবাহিনী বিমানঘাঁটির রানওয়েও গলে গেছে। ফলে রয়্যাল এয়ার ফোর্সের ফ্লাইটেও বিঘ্ন ঘটেছে।
তবে এরই মধ্যে স্বস্তির খবরও দিয়েছে ব্রিটেনের আবহাওয়া দফতর। জানিয়েছে, নিম্নচাপের ফলে বুধবার থেকে ঝড়-বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা আছে দক্ষিণ ও পূর্ব ইংল্যান্ডে। তার পরে তাপমাত্রা অনেকটাই কমে স্বস্তি মিলতে পারে। তবে মঙ্গলবার দেশটিতে তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি ছাড়িয়ে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা করেছে আবহাওয়া দফতর। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, ফক্সওয়েদার