ময়মনসিংহের ত্রিশালে ট্রাকচাপায় মৃত মায়ের গর্ভ ফেটে ভূমিষ্ঠ হওয়া নবজাতক কন্যা এবং তার দুই ভাই-বোনের সহায়তার জন্য একটি যৌথ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে।
গতকাল সোমবার (১৮ জুলাই) জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হকের নির্দেশে ত্রিশাল উপজেলা প্রশাসনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে সোনালী ব্যাংকের ত্রিশাল শাখায় সঞ্চয়ী ব্যাংক অ্যাকাউন্টটি খোলা হয়।
সোমবার (১৮ জুলাই) সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে ত্রিশাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আক্তারুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, রত্না আক্তার রহিমার নবজাতক ও অপর দুই সন্তানের সহায়তা হিসাব’ শিরোনামে সোনালী ব্যাংকের ত্রিশাল শাখায় সঞ্চয়ী অ্যাকাউন্টটি খোলা হয়েছে। যার নম্বর ‘৩৩২৪১০১০২৮৭২৮’। নবজাতক ও তার দুই ভাই-বোন নাবালক হওয়ায় তাদের দাদা এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার যৌথ স্বাক্ষরে অ্যাকাউন্টটি পরিচালিত হবে। এ পরিবারটিকে যারা সহায়তা করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন, তারা এই অ্যাকাউন্ট নম্বরে সহায়তার অর্থ পাঠাতে পারেন।
ইউএনও আক্তারুজ্জামান আরও বলেন, পরিবারটির বর্তমান অবস্থা বিবেচনায় আরও বেশ কিছু কর্মকাণ্ড হাতে নিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। শিশুদের দেখভাল করার জন্য উপজেলা সমাজসেবা অফিসারের সহায়তায় তাদের দাদি সুফিয়া আক্তারের জন্য একটি প্রতিবন্ধী ভাতার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেইসঙ্গে শিশুদের জন্য ভিজিডি কার্ডের ব্যবস্থা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নগদ ১০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও পরিবারটির সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ ও শিশুদের নিয়মিত খোঁজখবর রাখা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত শনিবার বাড়ি থেকে জাহাঙ্গীর আলম (৪০) তার আট মাসের অন্তসত্তা স্ত্রী ও ছয় বছরের কন্যাসন্তানকে নিয়ে আল্ট্রাসনোগ্রাম করার জন্য ত্রিশাল রওনা দেন। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক পারাপারের সময় দ্রুতগামী মালবাহী ময়মনসিংহগামী একটি ট্রাক চাপা দেয়। ঘটনাস্থলেই তিনজন নিহত হয়। এ সময় অন্তঃসত্ত্বা রত্না বেগমের পেটে থাকা নবজাতকের রাস্তায় প্রসব হয়। বাচ্চাটিকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে ময়মনসিংহের কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। বর্তমানে ময়মনসিংহ নগরীর লাবীব প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে শিশুটি।