ধনী ও গরিবের জন্য পানির দাম হবে আলাদা। আর্থিক সক্ষমতা ও এলাকাভিত্তিক পানির দাম প্রস্তাব করেছে ওয়াসার মূল্য নির্ধারণী টেকনিক্যাল কমিটি।
আবাসিকে প্রতি হাজার লিটারের জন্য ২ টাকা ৬৮ পয়সা কমিয়ে সর্বনিম্ন ১২ টাকা ৫০ পয়সা এবং সর্বোচ্চ ৩৭ টাকা ২৫ পয়সা পানির দাম প্রস্তাব করেছে কমিটি। বাণিজ্যিক ভবনে ৮ টাকা বাড়িয়ে প্রস্তাব করা হয় ৫০ টাকা।
সুবিধাভোগীদের সঙ্গে আলোচনার পর দাম চূড়ান্ত করা হবে বলে জানিয়েছে ওয়াসা। রাজধানীর পৌনে চার লাখ গ্রাহককে পানি সরবরাহ করে ঢাকা ওয়াসা। প্রতি হাজার লিটারে আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনে আলাদা দাম নেয় প্রতিষ্ঠানটি। তবে, এবার দাম নির্ধারণের প্রস্তাবে এসেছে পরিবর্তন।
প্রস্তাব অনুযায়ী, এলাকা ও আর্থিক সক্ষমতার ভিত্তিতে ১০টি জোন ও ৭ ক্যাটাগরিতে ভাগ করে জরিপ করে দাম প্রস্তাব করা হয়েছে। বর্তমানে সর্বনিম্ন পর্যায়ে ১৫ টাকা ১৮ পয়সা থেকে কমিয়ে ১২ টাকা ৫০ পয়সা প্রস্তাব করা হয়।
অন্যদিকে উচ্চবিত্ত গ্রাহকের জন্য ২২ টাকা ৩২ পয়সা বাড়িয়ে ৩৭ টাকা ৫০ পয়সা এবং বাণিজ্যিক ভবনে ৫০ টাকা প্রস্তাব করা হয়।
ওয়াটার এইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান বলেন, ‘ঢাকায় পানির উৎপাদন খরচের ওপরে ভিত্তি করে ধনী ও দরিদ্র এলাকায় যাতে আলাদাভাবে দাম কমানো যায়, এমন একটি চিত্র আমরা ওয়াসাকে দেখানোর চেষ্টা করেছি।’
এলাকাভিত্তিক দাম প্রস্তাব ইতিবাচক হিসাবে দেখলেও বাস্তবায়ন কঠিন হবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
এ ব্যাপারে পানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক এম ফিরোজ আহমেদ বলেন, ‘কাজটি বেশ কঠিন। তবে এলাকাভিত্তিক হোল্ডিং ট্যাক্সের ওপরে ভিত্তি করে কাজ করলে, কাজটি সম্ভবপর হবে বলে আশা করা যায়।’
ওয়াসা বলছে, জোনভিত্তিক জরিপের ফলাফল বাস্তবায়নের বিষয়ে আরো যাচাই বাছাই করা হবে।
ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা আরও আলোচনা করব। নতুন যেসব প্রস্তাব এসেছে এগুলো যাচাই-বাছাই করব আমরা।’
তবে, গ্রাহকের ওপর যেন বাড়তি চাপ না পড়ে সেদিকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘পানি নিয়ে যারা দুর্নীতি করছেন, তাদেরকে আমরা কোনোভাবেই প্রশ্রয় দিতে পারি না। আমাদের অবশ্যই একটি পর্যায়ে আসতে হবে যেখানে এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো যায়।’
ওয়াসার তথ্যমতে, ঢাকায় দিনে ২১০ থেকে ২৫০ কোটি লিটার পানি ব্যবহার হয়। এর মধ্যে অপচয় হয় ৫০ কোটি লিটার। অপচয় রোধ করা গেলে আরো কম দামে গ্রাহককে সেবা দেয়া সম্ভব বলে মনে করে সংস্থাটি।