রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন পশ্চিমাবিরোধী একটি জোট গঠন করতে ইরানে পৌঁছেছেন। সেখানে বিমান থেকে নামার পর তাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা দেয়া হয়। কিন্তু সমালোচকদের চোখ ছিল সাবেক এই কেজিবি বস পুতিনের ওপর। তার অঙ্গভঙ্গি, চাহনি- সবকিছুতে। তাতেই ধরা পড়লো পুতিনের ডান হাত ঝুলে আছে। তিনি যখন বিমান থেকে নেমে হাঁটছিলেন, তখন বেশ স্বাভাবিকভাবে বাম হাত নাড়াচ্ছিলেন। কিন্তু তার ডান হাত ছিল স্থির। মোটেও নড়ছিল না তা। একদম সোজা নিজের দিকে টান টান হয়ে ছিল। এ দিকেই চোখ পড়ে যায় সমালোচকদের।
সঙ্গে সঙ্গে তারা প্রশ্ন তুলে ফেলেন বিষয়টি নিয়ে। তাহলে কি এতদিন পুতিনের স্বাস্থ্য সম্পর্কে যা বলা হয়েছে তা সত্যি? তা-ই যদি না হবে, তাহলে কেন তার ডান হাত স্থির। দেখে মনে হয় অচল। এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে পশ্চিমা মিডিয়া। তেহরানে এ গতকাল প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ রইস এবং আয়াতুল্লাহ খামেনির সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। এ সময়ে ইরানের এয়ারফিল্ড পরিদর্শন করেছেন রাশিয়ার কর্মকর্তারা। তারা দেখেছেন ইরানের এয়ারফিল্ড ব্যবহার করে ইউক্রেনে ড্রোন ছোড়া যাবে কিনা। উল্লেখ্য, ইরান ও রাশিয়া- দুটি দেশের বিরুদ্ধেই পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞা আছে। তারা এখন পশ্চিমাবিরোধী অবস্থান তৈরি করতে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার চেষ্টা করছেন।
আগে থেকেই পুতিনের স্বাস্থ্য নিয়ে নানা গুঞ্জন আছে। সমালোচকরা বলেন, তিনি পার্কিনসন রোগে বা ক্যান্সারে ভুগছেন। এই অভিযোগে পশ্চিমা মিডিয়া যখন সরব তখন ডান হাত স্থির রেখেই তিনি বিমান থেকে নেমেছেন। তার শারীরিক সমস্যা এবারই প্রথম লোকচক্ষুতে ধরা পড়েছে এমন নয়। তাকে এর আগে দেখা গেছে মাঝে মাঝেই কাঁপেন। এ সময় সাপোর্ট পাওয়ার জন্য কিছু ধরতে হয় ৫ মাস আগে ইউক্রেনে আগ্রাসন চালানোর পর এটাই পুতিনের দ্বিতীয় বিদেশ সফর। যুক্তরাষ্ট্র থেকে গত সপ্তাহে সতর্কতা দেয়া হয় যে, ইউক্রেনে ব্যবহারের জন্য রাশিয়ার কাছে ড্রোন বিক্রির প্রস্তুতি নিচ্ছে ইরান। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভাল বলেছেন, মস্কোর কাছে শত শত যুদ্ধবিষয়ক ড্রোন দেয়ার পরিকল্পনা করছে তেহরান। এসব ড্রোন কিভাবে ব্যবহার করতে হবে, সে বিষয়ে রাশিয়ার সেনাদের প্রশিক্ষণ দেবে ইরানের সেনারা। এসব ড্রোন পরীক্ষা করতে ৮ জুন এবং ৫ই জুলাই ইরানের এয়ারফিল্ড পরিদর্শন করেছে রাশিয়ান একটি প্রতিনিধি দল। ধারণা করা হচ্ছে, ড্রোন সরবরাহের বিনিময়ে ইরানকে রাশিয়া অজ্ঞাত সামরিক সহায়তা দিতে পারে।