দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি ছাড়াই দেশের নিবন্ধিত ৩৯টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) আনুষ্ঠানিক সংলাপের চতুর্থ দিন আজ।
রোববার (১৭ জুলাই) থেকে শুরু হওয়া সংলাপ চলবে আগামী ৩১ জুলাই পর্যন্ত। বুধবার (২০ জুলাই) সংলাপের চতুর্থ দিনে ইসি সঙ্গে বসবে গণতন্ত্রী পার্টি।
নির্বাচন কমিশন জানায়, প্রতিদিন চারটি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এ সংলাপ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তিনটি বড় রাজনৈতিক দলের (আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি) জন্য বরাদ্দ দুই ঘণ্টা এবং বাকি দলগুলোর জন্য বরাদ্দ এক ঘণ্টা।
২০ জুলাই বিএনপির সঙ্গে এবং ৩১ জুলাই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংলাপের কথা রয়েছে। কিন্তু বিএনপি আগেই জানিয়ে দিয়েছে তারা সংলাপে অংশ নেবে না।
সেজন্য গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ড. শাহাদাত হোসেনের নেতৃত্বে ১০ জন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সংলাপে অংশ নেবেন। পরে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির সঙ্গে ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত সংলাপের জন্য সময় নির্ধারণ করা ছিল। কিন্তু বিএনপি আসবে না তাই বিকেল ৪টা থেকে ৫টার সময় এই দলকে সংলাপে ডাকা হয়েছে।
সংলাপের সময়সূচি অনুযায়ী, সকাল সাড়ে ১০টায় শুরুতে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) এবং পরে বিএনএফ, বাংলাদেশ কংগ্রেস ও বাংলাদেশ মুসলিম লীগের (বিএমএল) সঙ্গে বসছে ইসি।
এদিকে গত তিন দিনের সংলাপে আমন্ত্রণ পাওয়া ১২টি দলের মধ্যে বিএনপির দুই শরিক বাংলাদেশ মুসলিম লীগ ও বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি সংলাপে অংশ নেয়নি। আর বিএনপিও আগেই জানিয়ে দিয়েছে তারা অংশ নেবে না।
তবে বর্তমান ইসির ডাকে এবারই নয়, এর আগেও তাদের আমন্ত্রণে একবারের জন্যও ইসিতে যায়নি বিএনপি। এমনকি এই কমিশন গঠনের আগে রাষ্ট্রপতির সংলাপেও বিএনপি অংশ নেয়নি।
সংলাপে না যাওয়ার কারণ হিসেবে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে কোনো নির্বাচন কমিশনই সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারবে না। কারণ, বর্তমান নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কোনো ক্ষমতা নেই। দেশের মানুষ চায় না, এই নির্বাচনের কমিশন এবং সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হোক। এ কারণে ইসির কোনো সংলাপ ও আলোচনার বিষয়ে আমরা কোনো মন্তব্যই করি না।
গত জুন মাসে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেছিল কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন। কিন্তু এতে ১১টি রাজনৈতিক দল অংশ নেয়নি।
দলগুলো হলো বিএনপি, সিপিবি, বাসদ, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি ও বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি)।
এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই শিক্ষাবিদ, বিশিষ্ট নাগরিক, সম্পাদক, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ, নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে সংলাপ করেছে কাজী হাবিবুল আউয়ালের কমিশন। তারা জানায়, এসব সংলাপে পাওয়া পরামর্শগুলো পর্যালোচনা করে আগামী নির্বাচনের রূপরেখা চূড়ান্ত করা হবে।