প্রায় এক দশক আগে ভূমিকম্প ও সুনামির আঘাতে ধ্বংস হয় জাপানের ফুকুশিমা দাই-ইচি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। সেই বিদ্যুৎকেন্দ্রের তেজস্ক্রিয় পানি সমুদ্রে ছাড়া নিয়ে আলোচনা চলছিল দেশটির উচ্চ পর্যায়ে। শুক্রবার (২২ জুলাই) এক বিবৃতিতে জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সমুদ্রে তেজস্ক্রিয় পানি ফেলার অনুমোদনের কথা ঘোষণা করে। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।
শুক্রবার এ বিবৃতিতে বলা হয়, পানি ছেড়ে দেয়া নিরাপদ মনে করায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে পরিশোধনের পরও পানিতে তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ ট্রিটিয়াম থাকবে। ট্রিটিয়াম দীর্ঘদিন ধরে মানবদেহে প্রবেশ করলে ক্য়ান্সারের ঝুঁকি বাড়ে। তাই জাপান সরকারের এমন সিদ্ধান্তে চিন্তিত পরিবেশবিদরা। সমুদ্রের বাস্তুচক্রেও এর প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন তারা।
মূলত, যে তেজস্ক্রিয় পানি সমুদ্রে ছাড়ার অনুমোদন দেয়া হয়েছে, সেই পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের পারমাণবিক চুল্লি ঠান্ডা করতে ব্যবহৃত হতো। ২০১১ সালে ভূমিকম্প ও সুনামির ফলে বিদ্যুৎকেন্দ্র ধ্বংস হওয়ার পর থেকে প্ল্যান্টের বিশাল জলাধারে এই পানি সংরক্ষণ করা হচ্ছিল। চলতি মাস পর্যন্ত এই পানির পরিমাণ প্রায় ১৩ লাখ টন।
তবে পানি রাখার জায়গা ফুরিয়ে আসছে বলে আগেই ঘোষণা দিয়েছিল ফুকুশিমা বিদ্যুৎকেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠান টোকিও ইলেকট্রিক পাওয়ার কোম্পানি (টেপকো)। তারা জানিয়েছিল, ২০২২ সাল নাগাদ তাদের পক্ষে পানি রাখার মতো আর জায়গা থাকবে না। সেজন্যই এ পানি সমুদ্রে ছাড়ার অনুমোদন দিয়েছে জাপান সরকার।
তবে স্থানীয় জেলে সংগঠনগুলো সরকারের এ সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করেছে। তাদের অভিযোগ, এই সিদ্ধান্ত জেলেদের জীবিকাকে হুমকির মুখে ফেলবে। প্রতিবেশী চীন, দক্ষিণ কোরিয়া এবং তাইওয়ানও এমন পরিকল্পনায় উদ্বেগ জানিয়েছে।