বাংলাদেশ রেলওয়ের অব্যবস্থাপনা নিয়ে ৬ দফা দাবি বাস্তবায়নে আন্দোলনকারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনিসহ অন্যদেরকে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।
শনিবার (২৩ জুলাই) বিকেলে স্টেশন চত্ত্বরে আসার পরই রেলস্টেশনের বাইরের কলাপসিবল গেট আটকে দেন নিরাপত্তারক্ষীরা। এ সময় ট্রেনের যাত্রীদেরও ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি।
ফলে মহিউদ্দিন রনিসহ বাকি শিক্ষার্থীরা ওই ফটকের সামনেই অবস্থান নেন। ছয় দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত রনি যৌক্তিক আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলেও জানান। এ সময় তাদেরকে উদ্দেশ্য করে গেটের ওপাড় থেকে কে বা কারা পচা ডিম ছুঁড়ে মারে।
রেলের অব্যবস্থাপনা দূর করা, ট্রেনের টিকিটে কারসাজি বন্ধসহ ৬ দফা দাবিতে গত ৭ জুলাই থেকে কমলাপুরে আন্দোলন করছেন রনি। শুরুতে তিনি একাই অবস্থান কর্মসূচি পালন করলেও গত সোমবার থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী তার সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে গানের দল বিশ কুড়ি ‘আমাদের স্বপ্ন যেনো সত্য হয়। মানুষের স্বপ্ন যেন সত্য হয়’ গানে প্রতিবাদ জানায়।
এর আগে, ছয় দফা দাবি পূরণ করতে ৪৮ ঘণ্টা সময় দিলেও তাতে কাজ হয়নি। তাই আলটিমেটামের সময়সীমা শেষ হওয়ার পর বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) আবার অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রাখতে রনিসহ অন্য শিক্ষার্থীরা যান কমলাপুর রেলস্টেশনে। তবে, চলমান আন্দোলনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ‘বাধায়’ কমলাপুর স্টেশনে থাকতে না পেরে অবশেষে তারা সন্ধ্যায় শাহবাগে চলে যান।
‘ছয় দফাসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের হেনস্তা করার ঘটনায় তদন্ত সাপেক্ষে উপযুক্ত শাস্তির দাবিতে’ শুক্রবার বিকেলে আবার কমলাপুরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে যান মহিউদ্দিন রনি। কিন্তু ভেতরে প্রবেশ করতে না দেয়ায় তিনি প্রধান গেটের সামনেই বসে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যেতে থাকেন।
এ সময় সেখানে আসা সবুজবাগ থানা আওয়ামী লীগের কর্মী পরিচয় দেয়া এম এ সূর্য নামে এক ব্যক্তি রনিকে তার আন্দোলনের বিষয়টি পরিষ্কার করতে বলে নানা প্রশ্ন করতে থাকেন। একপর্যায়ে সেখানে থাকা জনতা ওই ব্যক্তিকে ‘দালাল’ আখ্যায়িত করে ধাওয়া দেন। এ সময় উত্তপ্ত হয়ে উঠে কমলাপুর স্টেশনের পরিবেশ। পরে পুলিশ তাকে সেখান থেকে সরিয়ে নেয়। এ সময় রনি সাংবাদিকদের বলেন, আন্দোলনের ইস্যুকে ধামাচাপা দিতে নতুন ইস্যু তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে।
এদিকে উপস্থিত সাধারণ মানুষ ধাওয়া খেয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় সূর্য সাংবাদিকদের বলেন, তারা দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করে ফেলেছে। তারা আমাকে মেরেছে।
গত মাসে রেলের টিকিট কিনতে গিয়ে হয়রানির শিকার হওয়ার পর ঈদুল আজহার আগে ৭ জুলাই থেকে কমলাপুর রেলস্টেশনের টিকিট কাউন্টারের সামনে অনশন শুরু করেন মহিউদ্দিন। ১০ জুলাই ঈদের দিনেও তিনি অবস্থানে ছিলেন। এর আগে গত এপ্রিলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্রের আধুনিকায়নের দাবিতে অনশন করেন তিনি।