আগামী ২৮-৩০ জুলাই গুলশান হোটেল শেরাটনে ভারতীয় অভিনেত্রী শিল্পা শেঠীসহ বিদেশি নিয়ে সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা ও বিজনেস অ্যাওয়ার্ডের আয়োজন করা হয়েছে। দেশের কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে মিরর ম্যাগাজিন পত্রিকার মালিক সেজে শাহজাহান ভূঁইয়া রাজু ও তার কথিত পার্টনার ইভান এমন অনুষ্ঠানের নামে প্রতারণা করছেন অভিযোগ তুলেছেন প্রতারণার শিকার এক ভুক্তভোগী।
এ অনুষ্ঠান বন্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র, তথ্য, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করেছেন ভুক্তভোগীর শিকার একজন। আবেদনের প্রেক্ষিতে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাছে আয়োজিত সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা ও বিজনেস অ্যাওয়ার্ডের বিষয়ে মতামত চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র, তথ্য, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর পাঠানো আবেদনে বলা হয়, শাহজাহান ভূঁইয়া রাজু তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও পার্টনার ইভান শাহরিয়ার সোহাগ মিলে দীর্ঘদিন মেয়েদের মডেল বানানোর প্রলোভনে বিভিন্ন অনৈতিক কাজে বাধ্য করে। তাদের অস্ত্র, স্বর্ণ ও মাদক ব্যবসার কাজে ব্যবহার করে। মিডিয়া জগতের অনেকের কাছেই তোদের এহেন কার্যক্রম ওপেন সিক্রেট।
এ ছাড়া ইভান শাহরিয়ার নৃত্যশিল্পীর আড়ালে দেশে-বিদেশে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের নামে নারী, মানব ও মাদকসহ অর্থ পাচার করে দুবাই, ভারত ও মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ডে হোটেল ব্যবসার আড়ালে অবৈধ কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে। এজন্য সম্প্রতি ইভানকে সিআইডি পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল। কিন্তু রহস্যজনক ইশারায় জামিন পেয়ে যায়।
সম্প্রতি তারা ওয়েস্টার্ন হোটেলে মিরর ফ্যাশন ও বিজনেস অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠান করেছে। এ ছাড়া জুলাই ২৮-৩০ তারিখে হোটেল শেরাটনে বিজনেস অ্যাওয়ার্ড ও ফ্যাশন শো করবে মিরর ফ্যাশন বিজনেস ম্যাগাজিনের ব্যানারে। অথচ এই পত্রিকার ডিকলারেশন নেই। নেই প্রতিষ্ঠানের সঠিক অস্তিত্ব। বরং মিথ্যা ও জালিয়াতি করে ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়ে অসংখ্য মানুষের কাছ থেকে কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। তার এ সমস্ত অপকর্মের জন্য কিছু অসৎ ও কালো টাকার মানুষকে ব্যবহার করেছেন। রাজু ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন অনবরত লঙ্ঘন করছেন। এ ছাড়া ভুয়া কাগজপত্র বানিয়ে জালিয়াতি ও গুরুতর অপরাধমূলক ব্যবসা করে যাচ্ছেন।
অভিযোগ আরও বলা হয়, রাজুর মিরর পত্রিকা বা অন্য কোনোটির অনুমতি (ডিক্লারেশন) নেই। ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে অনুষ্ঠান সাজিয়ে আইনের চোখে ধুলো দিয়ে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অপরাধ করে যাচ্ছে। রাজু মিডিয়া ব্যবসার আড়ালে সরকারবিরোধী বিভিন্ন অপকর্ম ও অপশক্তির সাথে সম্পৃক্ত থেকে রাষ্ট্র বিরোধী কার্যকলাপে জড়িত রয়েছে। দিল্লি ও কলকাতাতে রয়েছে তার কথিত ব্যবসার আড়ালে অবৈধ কারবার।
‘২০১৩ সালে রাজু বিদেশি শিল্পী গোলাম আলীকে আনার নামে প্রতারণা করে। ২০১৪ সালে বঙ্গবন্ধু সম্মেলন কেন্দ্রে পাকিস্তানি শিল্পী রাহাত ফাতে আলী খানকে এনে অনুষ্ঠান করার নামে প্রতারণা করে কোটি টাকা হাতিয়েছিল। কিন্তু শিল্পী না আসায় তখন তার বিরুদ্ধে শেরেবাংলা নগর থানার মামলা হয়। যা এখনো চলমান। ২০১৯ সালে রাজধানীর একটি কনভেনশন সেন্টারে দেশি-বিদেশি জুয়েলারি মেলার নামে বেশ কয়েকটি কোম্পানি থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। তখনকার বাণিজ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে কোনও প্রোগ্রাম করতে পারেনি। এখন আবার ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে ভারতীয় শিল্পা আনার নামে ধান্দাবাজি শুরু করেছে।
এজন্য রাজুর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের নেওয়ার দাবি জানান ভুক্তভোগী।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে শাহাজাহান ভূঁইয়া ‘এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন’ বলে ফোন কেটে দেন।