অভিনয় করে, গান গেয়ে, নির্বাচনে অংশ নিয়ে, হরেক বিষয় নিয়ে মন্তব্য করে; গত কয়েক বছর ধরে আলোচনায়-সমালোচনায় আশরাফুল আলম সাঈদ ওরফে হিরো আলম।
সম্প্রতি নানা ধরনের গান গেয়ে তিনি নতুন সমালোচনার জন্ম দিয়েছেন। কেউ তার গানকে বলছেন, রীতিমতো উৎপাত। এরমধ্যে রবীন্দ্র সঙ্গীতের সুর বিকৃত করে হিরো আলম পড়েছেন বড় বিপদে। এবার সেই বিপাক এড়াতে ‘কখনও রবীন্দ্র সঙ্গীত গাইবেন না’ পুলিশের কাছে এমন মুচলেকা দিয়েছেন হিরো আলম।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) জিজ্ঞাসাবাদে দেওয়া মুচলেকায়, অনুমতি ছাড়া পুলিশের পোশাক পরবেন না, বিকৃত করে রবীন্দ্র ও নজরুল সঙ্গীত গাইবেন না মর্মে মুচলেকা দিয়েছেন হিরো আলম।
বিভিন্নজনের অভিযোগের ভিত্তিতে ডিএমপি’র সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের ডাকে আজ বুধবার (২৭ জুলাই) সকালে মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে উপস্থিত হন হিরো আলম। সেখানে বিভিন্ন বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
ডিএমপি’র মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপি’র অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) হারুন-অর-রশিদ বলেন, ‘হিরো আলমের বিরুদ্ধে ডিবি সাইবার ক্রাইম বিভাগের কাছে অজস্র অভিযোগ। এই পরিপ্রেক্ষিতে আজ তাকে ডাকা হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘হিরো আলমের কথা আর কি বলব! পুলিশের যে ড্রেস, যে প্যাটার্ন, ডিআইজি, এসপি’র যে ড্রেস তা না পরে কনস্টেবলের ড্রেস পরে ডিআইজি, এসপি’র অভিনয় করছেন তিনি। ডিএমপি’র কমিশনার শিল্পী সমিতিতে বলেছেন পুলিশের পোশাক পরে অভিনয় করতে হলে অনুমতি নিতে হবে। কিন্তু হিরো আলম শিল্পী সমিতির সদস্যও না। অথচ তিনি অনুমতি ছাড়া পুলিশের পোশাক পরছেন। কনস্টেবলের ড্রেস পরে এসপি ডিআইজির অভিনয় করছেন। এটা তিনি জানেনও না।’
হারুন আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের যে কৃষ্টি-কালচার রয়েছে আমরা গান গাই-শুনি, রবীন্দ্র-নজরুল সঙ্গীত। কিন্তু হিরো আলম যেভাবে গান গায় তাতে এসব কৃষ্টি-কালচার পুরোটাই চেঞ্জ করে দিয়েছে। আমরা জিজ্ঞাসা করেছি, আপনি এসব কেন করেন? তখন হিরো আলম আমাদের বলেছেন, আমি আর জীবনে এসব করব না। আমি আর পুলিশের পোশাক পরব না। কোনো ধরনের রবীন্দ্র-নজরুল সঙ্গীত গাইব না।’
মুচলেকায় যেসব বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে, অভিনয়ের ক্ষেত্রে যেকোনো বিশেষ বাহিনীর পোশাক ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিকৃতভাবে উপস্থাপন না করে তা যথাযথ নিয়ম মেনে সঠিকভাবে উপস্থাপন করা হবে। বাঙালি সংস্কৃতি বিকৃতভাবে উপস্থাপিত হয় এমন কোনো কন্টেন্ট তৈরি ও প্রচার করা হবে না। ব্যাঙ্গাত্মক, মানহানিকর, হেয় প্রতিপন্নমূলক কোনো কন্টেন্ট তৈরি ও প্রচার করা হবে না। এমন কোনো কন্টেন্ট প্রচার করা হবে না যা জনমনে অসন্তোষ তৈরি হয়।