নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, সরকার ১০ কোটি টাকা খরচ করে হাতিরঝিলে শতভাগ বিদ্যুৎ উৎসব করেছিল। তখন বলেছিল, আমরা লোডশেডিংকে মিউজিয়ামে পাঠিয়ে দিয়েছি। কিন্তু আজ সারাদেশে লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে মানুষ বলছে, লোডশেডিংকে নয় শেখ হাসিনাকে মিউজিয়ামে দেখতে চাই। এখন মন্ত্রীরা কথা বলতে ভয় পান, সচিবরা কথা বলেন।
বুধবার(২৭) জুলাই বিকাল ৫ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে নাগরিক ঐক্য আয়োজিত দুর্বিষহ লোডশেডিং, দ্রব্যমূল্যের সীমাহীন ঊর্ধ্বগতি, সন্ত্রাস দুর্নীতি আর লুটপাটের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মিছিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মান্না বলেন, বাংলাদেশে শেখ হাসিনাও ভয় পান কিন্তু আমাদের কোনো ভয় নেই, কারণ আমার বিরুদ্ধে দেশের সবচেয়ে বড় দুটি মামলা আছে। কয়েকবার জেলে গিয়েছি। মন্ত্রীরা এখন ইনিয়ে বিনিয়ে জনগণকে বুঝাচ্ছেন লোডশেডিংটি কীভাবে যৌক্তিক। সরকারের একজন মুখ্য সচিব বুঝাচ্ছেন লোডশেডিং ও ডলার সংকট কীভাবে যৌক্তিক। এখন মন্ত্রীরা কথা বলতে ভয় পান, সচিবরা কথা বলেন। কারণ জনগণের কাছে তাদের কোনো জবাবদিহিতা নেই।
তিনি আরও বলেন, ব্যাংকগুলোকে জ্বালানি খাতে ঋণ দেওয়ার সুপারিশ করে সরকার আরেক দফা লুটপাট করার পাঁয়তারা করছে। আমাদের ডলার সংকটের কারণ আমাদের টাকা বিদেশে পাচার হয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী বলছেন, যুদ্ধের কারণে জ্বালানি সংকট, আসলে তা নয় বরং অপরিকল্পিত সিদ্ধান্তেই এই সংকট। রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে নয়।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি বলেন, সরকার বলছে দেশে ৪০ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ আছে। তাহলে আইএমএফের কাছে কেন ঋণ চাওয়া হচ্ছে? আইএমএফ বলছে ঋণ দেবে না, কারণ সরকার সঠিক হিসেব দিচ্ছে না। তারা ২ টাকা পকেটে রেখে ১ টাকার হিসেব দেয়। ইউরোপকে যখন রাশিয়া গ্যাস দেয়নি তারা টাকার বস্তা নিয়ে সিঙ্গাপুর থেকে গ্যাস নিয়েছে। কুইক রেন্টালের মাধ্যমে বসিয়ে রেখে কোটি কোটি টাকা খরচ করেছে সরকার। এখন ডলারের অভাবে গ্যাস ও কিনতে পারছে না তারা। আমাদের দেশেও গ্যাস আছে কিন্তু সেই গ্যাস উত্তোলনের উদ্যোগ নেয়নি সরকার। কারণ তাদের উদ্দেশ্য বাইরে থেকে কিনবে আর কমিশন খাবে। ক্যাপাসিটি চার্জের নামে অতিরিক্ত টাকা খরচ করেছে। সরকার বলছে ৩০ দিনের গ্যাস আছে কিন্তু একদিন শুনবেন গ্যাসের অভাবে পাম্পগুলো বন্ধ হয়ে গেছে, তখন মাথা চাপড়িয়ে লাভ হবে না।
মান্না বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেন আমি জানি কারা কারা বিদেশে টাকা পাচার করে। কিন্তু জেনেও তিনি তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। প্রতিবছর দেশ থেকে ৭০ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়ে যায় এটা যদি দেশে থাকত তাহলে এত সংকট হত না।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, বিএফইউজের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ্ কায়সার, আশরাফুল হক প্রমুখ।